চিলেকোঠা ওয়েবজিনে প্রকাশিত সাহিত্যকর্ম ও অন্যান্য

সুখ ও প্রাপ্তি বিষয়ক


সুখ ও প্রাপ্তি বিষয়ক
সাদিয়া সুলতানা

বাদলকে আমি ঈর্ষা করি কিনা বুঝতে পারি না। নাকি আমি সমীহ করি বাদলের জীবনবোধ? সংগোপনে উত্তর হাতড়াতে গিয়ে বুকের বাম দিকে চিনচিনে একটা অনুভূতি হয়। ঈর্ষা আর সমীহ শব্দ দুটির বহিঃপ্রকাশ নীরবতাতেই বেশি শোভনীয় বলে আমি আপাতত চুপ থাকি। বাদলের দিকে তাকাই। বাদল সাড়ে চারটার দিকে আমার অফিসে এসেছে। মামুন ভাইকে বলে ওর সাথে একটু আগে অফিস থেকে বের হয়েছি। বাদলের সাথে আড্ডার লোভ সামলানো প্রায় অসম্ভব। বাদল কফির মগ এগিয়ে দেয় আমার সামনে।
-নে দোস্তো, শুরু কর।

বাদলের চোখে আমার মনের বিপরীতমুখী দ্বন্দ্ব ধরা পড়ে না বলে কিঞ্চিৎ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি। ও কফিতে চুমুক দেয়। ঠিক পথক্লান্ত রিকশাওয়ালার পরিতৃপ্তিতে বাদল ছুড়ুৎ ছুড়ুৎ শব্দ করে কফি খাচ্ছে। এতো পানীয় পান নয় রীতিমতো খাওয়া। কর্পোরেট কালচারে অভ্যস্ত আমার ভেতরে এই শব্দের অনভ্যস্ততা ভীষণ একটা অস্বস্তি তৈরি করে। আমাদের পাশের টেবিলে একটা মেয়ে বসে। মেয়েটার সাথে প্রায় সমবয়সী একটা ছেলে ছিল। হাল ফ্যাশনের ড্রেস আপ, হাতে দামী আই ফোন। দু’জন খানিকক্ষণ আগে খুনসুটি করতে করতে সেলফি তুলছিল। ছেলেটি বোধহয় টয়লেটে গেছে। আশেপাশে দেখতে পাচ্ছি না। মেয়েটার বয়স বিশ বছরের মতো হবে। ভার্সিটি পড়ুয়া হয়তো। প্রেমিকের সাথে নিরিবিলিতে সন্ধ্যাটা কাটাতে এসেছে। মেয়েটা সুন্দরীর তুলনায় আকর্ষণীয় বেশি। জিনস আর খাটুয়ার সাথে গলায় ঝোলানো রঙধনু স্কার্ফে মেয়েটাকে বেশ দৃষ্টিকাড়াই লাগছে। মেয়েটার দৃষ্টি অবশ্য এখনও বাদলের দিকে।
বাদলের কফি খাওয়া দেখে মেয়েটা ওর সামনে থাকা কোল্ড কফির স্ট্রতে ঠোঁট রেখে টান দিতে ভুলে গেছে। 

স্কাই ভিউ ক্যাফেতে জিন্স প্যান্ট আর হাল ফ্যাশানের গেঞ্জি পরা যুবককে শব্দ করে কফি খেতে দেখে মেয়েটার মতো নিদারুণ অস্বস্তি নিয়ে আমি বাদলের দিকে তাকাই। কিন্তু কিছু বলি না। আমি জানি বাদল এমনই। গত আট বছরের দীর্ঘ ছেদেও বাদলের কোনো স্বভাব আমি ভুলিনি। তাছাড়া বাদল মোটেও বদলায়নি। আমি নিজের কফি খাওয়া বন্ধ করে বাদলের শেষ চুমুকের অপেক্ষা করি। কিন্তু বাদলের কফি শেষ করার তাড়া নেই। সে একইভাবে আওয়াজ করে কফিতে চুমুক দিচ্ছে। একবার সেই মেয়েটির দিকে চোখে চোখ পড়তেই বাদল হাসলো। বাদল লজ্জা পেলো না, বরং মেয়েটাই লজ্জায় নিজের কফি পানে মনোযোগ দিলো। 

আমি বাদলকে নিশ্চুপ দেখে প্রশ্ন করি,
-কী করছো আজকাল? ফেসবুকে তো আ্যাবাউটসে কিছু খুঁজে পাই না। অবশ্য নিয়মিত বসা হয় না আমার।
-কিছু করা বলতে তুই যদি চাকরি করা বোঝাস তাইলে কিছুই করতেছি না।
-কিছুই না মানে?
-তুই মনে হয় জানোস না মাসুদ, আমার কোনো চাকরি টিকে না।
-তা এখন কি বেকার আছো?
-বেকার থাকবো ক্যান! আরে শালা একটা যায় তো আরেকটা পাই। সুবিধা আছে, বুঝলি মামু। ফেসবুকে আর কত পাল্টামু হোয়ার আ্যাবাউটস!
-অত চাকরি পাও কোথায় বন্ধু? আমি তো একটা রাখতেই হিমশিম খাই।
-আরে দূর মানুষ আবার গোলাম না রাখে। বাঙালি গোলাম প্রিয়। চাকরি ঠিকই জুইটা যায়। ছাইড়াই দ্যাখ না একবার। একটা গেলে পাঁচটা পাবি।

আমি বাদলের মতো অনায়াসে বন্ধু-বান্ধবকে তুই তোকারি করতে পারি না। তেমনি অনায়াসে চাকরিও ছাড়তে পারি না। এইতো গতবছর আমাকে ডিঙিয়ে জুনিয়র ছেলেপেলের প্রোমোশন হওয়ায় কিছুটা অভিমান করে চাকরি ছাড়ার কথা ভেবেছিলাম কিন্তু ঝুঁকিহীন জীবনের লোভে আর ছাড়তে পারিনি। রাহাত সেদিন চ্যাটিঙের সময় বলছিল বাদলের চাকরি ছাড়ার রোগের কথা। আমাকে অবশ্য সাবধানও করেছে, এসব ছেলেপেলে ধান্দা করে টাকা ধার চাইতে পারে বলে। কিন্তু আমি জানি বাদল ধার চাওয়ার মতো ছেলে না। তাছাড়া আজ বাদলের পরিচ্ছদই বলে দিচ্ছে আর্থিক অস্বচ্ছলতা নেই ওর।

কোনো কিছুর এক পিঠ দেখা হইয়া গেলে আরেক পিঠ দেখতে মন চায়। এই ধর, বেশিরভাগ মানুষের জীবনটা কেমন? গড়পড়তা বেশিরভাগ মানুষ আমরা একটা ফ্যান্টাসিতে বাস করি, সমস্যা এভয়েড কইরা। মোদ্দাকথা আমরা ভোগবাদী। যতটুকু করলে আমাদের অস্তিত্বে আঘাত আসবো না, আমরা ঠিক ততটুকুই করি-এই শ্রেণির মানুষের জীবনে একটা সময়ে আর কিছু পাওয়ার থাকে কি? থাকে না। তখন তার সামনে দুইটা পথ খোলা থাকে।

-এখন তাহলে কী করছো?
-সামনের মাসে একটা ফার্মে জয়েন করার কথা। দেখি।
-কাজ নাই, দেখাদেখির কি আছে, ঢুকে যাও।
-তা একপ্রকার ভালোই বলছস। মাঝখানে কিছুদিন বিকাশের এজেন্ট হইছিলাম বুঝলি, লাভ খুব একটা খারাপ না। পরে ছাইড়া দিলাম। কম্পিটিশন বাইড়া গেল।
ওর কথা শুনে আমি শব্দ করে হাসি।
-হাসিস না। দ্যাশে ব্যবসা করা মানে বিরাট ঝক্কি।
-তোমার রেজাল্ট তো অত খারাপ ছিল না। গ্রেড ভালোই ছিল। ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে বিকাশের ব্যবসায় গেলে?
-আরে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য গেছিরে মামু। আগের ফার্মটার ম্যানেজারের সাথে ঝামেলা হইল রাগের মাথায় চাকরি ছাইড়া দিলাম। অইটাই সবচেয়ে বেশিদিন করছি। বছর দুই। অনেকবার মনে মনে চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেও আমার বউ তাহেরার কান্নাকাটিতে চাকরি ছাড়ি নাই। ছাড়ার পর নিজের কিছু জমানো টাকা আর তাহেরার কাছ থেইকা কিছু টাকা নিয়া বিকাশের ব্যবসা করলাম গত এক বছর। সাথে পোলট্রির ব্যবসাও করছি। ব্যবসা করতে গিয়া লাভ হইছে প্রচুর। 
-বাহ! 
-আরে দোস্ত ট্যাকার লাভ না। জ্ঞান লাভ।
বাদল নিজের কথায় মজা পেয়ে নিজেই হাসে। ওর হাসিতে একটা শিশুসুলভ ব্যাপার আছে। বাদলের চুলগুলো কোঁকড়া, গায়ের রঙ শ্যামবর্ণ। চেহারা বেশ আকর্ষণীয়। হাসলে ওর চেহারাটা নিষ্পাপ লাগে। আমার কৌতূহল বাড়ে বাদলের হাসিতে।
-কী কী জ্ঞান লাভ করলে?
-এই ধর, বাঙালি জাতি ভালো কিছু করে ঠিকই তবে এক সাথে করতে পারে না। যখনই ভালো কিছু হয় তখনই একটা চুলের আগা ফাটার মতো অনেকগুলো মুখ বাইর হয়। মানে খালি গ্রুপ করে। ত্রিমুখী-চর্তুর্মুখী ভালোতে দেশ ভাইসা যায় ঠিকই কিন্তু ততদিনে মনের ভেতর ঘুণে ধরে। অন্যের ভালোতে ভালো লাগে না তখন।

আমাদের কলেজের বাংলার সামাদ স্যার যেভাবে লালসালু পড়াতেন ঠিক সেই কায়দায় বাদল কথা বলতে থাকে। আমি চুপচাপ শুনি।
-মনে কর সেই সেলুনের দোকানের মতোন। পুরানা দোকানী মার্কেটের জৌলুসহীন কোণে থাইকা পুরানা ক্ষুর দিয়া চুল কাটে আর আশেপাশের পার্লারের রঙ দেইখা মুচকি হাসে। মনে মনে কয়, ভালো কইরা চুল কাট ব্যাটা, একদিন তোর ব্যবসা লাটে উঠবো। মনে কর, পুরানা সেলুনের দোকানের পাশে যে, তেল কসমেটিকসের দোকান বা চায়ের টঙও ভালো চলে সেইটা বাঙালির মাথায় থাকে না। মাথায় থাকে, রহিম সেলুনের দোকান দিয়া ভালো ব্যবসা করতেছে, আগে রহিমের ব্যবসা ডাউন দিমু, হেরপর নিজের ব্যবসার লাভ। মাঝখান দিয়ে পুরানা কাস্টমাররা রহিমের দোকানেই যায় আর করিমের পার্লারে পুরানা কাস্টমারের মইধ্যের ক্ষ্যাপা কয়জন যায়। লাভের মইধ্যে দুইটা লাভ হয়, রহিম-করিম চুল কাটে আর গীবত কইরা একজন আরেকজনের ভাইয়ের গোশত খায়, দ্বিতীয় লাভটা হইলো দুজনের ব্যবসাতেই শুধু টাইনাটুইনা পুঁজি ওঠে, কোনো লাভ আর ওঠে না।
-তা এত অভিজ্ঞতা নিয়ে কি সেলুনের দোকান দিবে? 
আমার কটাক্ষ ধরতে পেরে বাদল হাসে। 
-মনে কর মামু তুই যে জীবনের ভিতর দিয়ে যাস, তুই কি মজা পাস? 
আমি উত্তর দিই না। অথচ উত্তরটা আমার অজানা না। বাদলের প্রশ্ন শুনে নিজের সাথে প্রতারণা করার অস্বস্তিটা যেন এই প্রথমবারের মতোন বুকের ভেতরে ঘাই মারে। নিজেকে সামলে নিয়ে আমি উল্টো ওকে প্রশ্ন করি,
-তুমি নিজে কি মজা পাও?
-না পাই না। তাই তো আমি এট্টু মজা নেই মামু। ভোগবাদী জীবনের শেষটা দেখা হইয়া গেলে জীবনের প্রতি একটা নিরাসক্তি কাজ করে, তখনই আমি জীবনে নয়া ডাইমেনশন আনি।
এবার বাদল হাসে না। বাদলের মুখে ক্যাফের আলো আঁধারির রহস্যময় ছায়া।
-তুমি ইচ্ছে করে বৈচিত্র্য আনো?
-হু, কোনো কিছুর এক পিঠ দেখা হইয়া গেলে আরেক পিঠ দেখতে মন চায়। এই ধর, বেশিরভাগ মানুষের জীবনটা কেমন? গড়পড়তা বেশিরভাগ মানুষ আমরা একটা ফ্যান্টাসিতে বাস করি, সমস্যা এভয়েড কইরা। মোদ্দাকথা আমরা ভোগবাদী। যতটুকু করলে আমাদের অস্তিত্বে আঘাত আসবো না, আমরা ঠিক ততটুকুই করি-এই শ্রেণির মানুষের জীবনে একটা সময়ে আর কিছু পাওয়ার থাকে কি? থাকে না। তখন তার সামনে দুইটা পথ খোলা থাকে।

এবার বাদল থামে। মুখের হাসি বলে দিচ্ছে ওর এই স্বেচ্ছাবিরতি আমাকে কৌতূহলী করার জন্যই। 

-কী কী পথ?
-তখন মানুষ হয় চরম বিষণ্নতায় ভোগে, হয়তো ক্রমাগত আত্মহত্যার দিকে আগায় নতুবা জীবনের গতিপথ পাল্টায় ফেলে। ধর, নতুন নতুন ডাইমেনশন আনে। তার যা খুশি তাই করে।
-সব পেয়ে গেলে মানুষ যা মন চায় তা করবে? তার পরিবার আছে না? 
-থাকুক। সুখের সব গন্তব্য জানা হইয়া গেলে জীবনের ভোগবাদীতা অসহ্য লাগে মামু।
-জীবনের ভোগবাদীতা অস্বীকার করে তুমি যা খুশি করতে পারবে? মৌলিক চাহিদাগুলো তোমাকে ছাড় দিবে?
-দোস্ত যা খুশি তা তো করতেই পারি। এই ধর, অফিস-ব্যবসা বাদ দিয়া শহীদ মিনারে শুইয়া থাকি। মাঝে মইধ্যে কারা কারা দল বাইন্দা অনশন করে, রালি করে তাদের সাথে প্রথম সারিতে বুক চিতায় দাঁড়ায় থাকি। একটা দুটা ককটেল ফুটলে কইষা দৌড় মারি, পুলিশের গরম পানি খাই। 
-তুমি সত্যি এসব কর?
-করি দোস্ত। কোনো কিছুই যখন এই জীবনদর্শনের সাথে খাপ খায় না, তখন মাঝে মইধ্যে অমন কিছু করি। আজকাল মন চায় একটা পরকীয়া করি, তাহেরারে কান্দাই। হাহাহা।
বাদলের মুখ ঝলমল করছে। আমি মুহূর্তের জন্য ভাবলাম ও স্বভাবসুলভ রসিকতা করছে। কিন্তু ওর মুখ সে কথা বলছে না। বাদল যা বলছে ঠাণ্ডা মাথায় বলছে।
-তার মানে তুমি বলছো, এই জীবনে তোমার সব পাওয়া হয়ে গেছে? দুটি সস্তান, গৃহিনী, পরিপাটি গৃহগল্পে এখন তোমার কোনো নতুন চাহিদা নেই? বৈচিত্র্য নেই? কিন্তু মানুষের কি চাহিদার শেষ আছে? না চাহিদাপূরণে পরিতৃপ্তি আছে? এখন তোমার পরকীয়া করা লাগবে? নাকি অলরেডি করছো?
আমার গলায় কটাক্ষের সুর বাদল টের পায় কি পায় না আমি তা বুঝতে পারি না। ও মৃদু হেসে বলে, 
-সিদ্ধান্ত নেই নাই। ভাবতেছি।
-এসব ভাবনা বাদ দাও।
-বাদ বললেই বাদ দেয়া যায়? নতুন ডাইমেনশনে জীবনের পথ ঘোরাতে হইব। নয়তো বাঁইচা থাকার মানে কী? প্রথম পথ বিষণ্নতায় হাঁটতে পারুম না।
-অবশ্য তোমাকে বুঝিয়ে কী হবে। নিজের মত ছাড়া কারো মত তো তোমার দর্শন হয় না।
-ঠিক চিনছো দোস্ত আমারে। এই যে জীবন দর্শন বিষয়টাই একান্ত নিজস্ব। নিজে যে পথে হাঁটবা সেটাই তোমার দর্শন। সেই দর্শনকে নিজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারার মজা না বুঝলে মানুষ কীসের মানুষ!

বাদলের কথাগুলো গালগপ্পো বলে আমি উড়িয়ে দিতে গিয়েও পারি না। আমার কাছে ফুটানি মেরে নিজে বড় হবার ছেলে বাদল না। এই বাদল সেই মানুষ যে বন্ধুর জন্য সাইকেল চুরির অপবাদে হাজতবাস করছে, এ সেই বাদল যে বন্ধুর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেমিকের হাতে ক্ষুরের পোঁচ দিয়েছে। কফিশপের মায়াবী আলো আমাকে স্মৃতিকাতর করে তোলে। স্কুল-কলেজের দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। আড্ডার ঝড় খানিক স্তিমিত এখন।
-বাদল মনে আছে তোমার? ফার্স্ট ইয়ারে নবার হাতের তালুতে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়েছিলে?
-হা হা হা। খুব মনে আছে। নবা শালাটা এখনও হারামি। সেদিন মার্কেটে দেখা, দেখি শালা তাহেরার বুকের দিকে তাকায় আছে। মন চাইল হারামিটার হাতে আবার ছ্যাঁকা দিই।
আমি হাসি। এই মানুষটাই খানিক আগে পরকীয়ার বাসনার কথা বললো! বাদলও তাহলে হিপোক্রেসি করে!
-হাসছিস ক্যান মাসুদ?
-তোমার দ্বৈত চরিত্র দেখে। তুমি না পরকীয়া করবে? তা তোমার বউয়ের দিকে কেউ তাকালে কেমনে কী?
-আরে দুর তুই ভাল কইরাই জানোস, তাহেরার জায়গায় অন্য কোনো মেয়ে থাকলেও আমি একই কথাই বলতাম।

ক্ষণিকের জন্য বিস্মৃতিতে পড়া আমার মনে পড়ে বাদল সত্যিই তাই। বাদলের ভেতরে দ্বৈত স্বত্ত্বা নেই। বাদলের সাথে সুখ ও প্রাপ্তি বিষয়ক আড্ডার রেশটুকু সাথে নিয়ে আমি কফিশপ থেকে বের হই। বাড়ি ফেরার পথে নিজের ভেতরে একটা প্রশ্নই বারবার ঘুরপাক খেতে থাকে, বাদলকে আমি ঈর্ষা করি নাকি সমীহ করি বাদলের জীবনবোধ?

এর ঠিক তিন মাস পরে রাহাতের কাছ থেকে বাদলের মৃত্যু সংবাদ পেলাম। বাদল আত্মহত্যা করেছে।

লেখা পাঠানঃ chilekothasahitto@gmail.com

মন্তব্যসমূহ

দেশসেরা বুকশপ থেকে কিনুন চিলেকোঠার বই

চিলেকোঠা বেস্ট সেলার বইসমূহ

‘নক্ষত্রের খোঁজে’ প্রতিযোগিতা ২০২২ এর নির্বাচিত বই