চিলেকোঠা ওয়েবজিনে প্রকাশিত সাহিত্যকর্ম ও অন্যান্য

শায়েখ বোদলেয়ার মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীগো নিয়া কী কইলেন; দেখেন কবিতাসহ



শায়েখ বোদলেয়ার মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীগো নিয়া কী কইলেন; দেখেন কবিতাসহ
মীর হাবীব আল মানজুর

আমি থাকি আর পড়ি একই এলাকায় ছোটকাল থিকা। এই এলাকার নাম মুহাম্মাদপুর। মুহাম্মাদপুররে এখনো অনেকে মোঘলদের এলাকা কইয়া ডাকেন। কারণ, এই এলাকার শাখাগুলার যে নাম সেগুলাসব মুঘল রাজরাজড়াদের নামে; শাহজাহান রোড, তাজমহল রোড, হুমায়ূন রোড, নুরজাহান রোড ইত্যাদি ইত্যাদি। মুহাম্মাদপুরে মোঘল সময়ের একমাত্র নিদর্শন সম্ভবত সাত মসজিদ। মোঘল সময়ের তেমন কোনো নিদর্শন না পাওয়া গেলেও আরেকটা ব্যাপার এইখানে বেশ দেখতে পাওয়া যায়, সেইটা হইল, প্রচুর মসজিদ আর মাদ্রাসা। যুগপৎ ছেলেদের মাদ্রাসার সঙ্গে ইদানীং অনেক মেয়েদের মাদ্রাসাও তৈয়ার হইতেছে। সাধারণত মাদ্রাসাগুলায় একেবারে ড্রেস নির্দিষ্ট কইরে দেয়ার চেয়ে দেখা যায় ইসলামী শরিয়া মোতাবেক যে পোশাক পরলে আপত্তি নাই, তাইই পড়তে কওয়া হয়। তাতে কইরে মাদ্রাসার ছেলেরা পাঞ্জাবি-পায়জামার সঙ্গে টুপি আর মেয়েরা কালো বোরকায় ঢাকা থাকেন। মেয়েদের নেকাবের ভেতর শুধু চোখ দুইটা খোলা থাকে, কখনো তাও থাকে না। আর কখনো যদি উনারা পা মোজা না পরেন, তাইলে তাদের ফর্সা পা দেইখা অনেক তরুণ হুজুররা আত্মপ্রসাদ লাভ করতে পারেন খুবই কিঞ্চিত পরিমাণে।

এতক্ষণে আমরা যেইটা লাভ করলাম সেইটা হইলো শার্ল বোদলেয়ারের একটা কবিতা অনুভবের প্রাথমিক জ্ঞান। মানে এই প্রাথমিক জ্ঞানটা যদি থাকে তাইলে পরে ওই কবিতার একটা অন্যরকম অনুভব চাইলে আমরা লাভ কইরে ফেলতে পারি।

হে পাঠকে মহীয়ান! বোদলেয়ারের ওই কবিতার নাম হইল, "এক পথচারিণীকে", যেইটা বোদলেয়ারের "প্যারিস চিত্র" বইয়ের কবিতা।
আমরা তাইলে এখন কবিতার ক্বেরাত করিঃ -

"গর্জনে বধির করে রাজপথে বেগ ওঠে দুলে।
কৃশতনু, দীর্ঘকায়, ঘনকালো বসনে সংবৃত
চলে নারী, শোকের সম্পদে এক সম্রাজ্ঞীর মতো,
মহিমামন্থর হাতে ঘাঘরার প্রান্তটুকু তুলে-"

তফসিরঃ- প্রথমেই বোদলেয়ার একটা কিছুর প্রেক্ষিত বর্ণনা করতাছেন পথের ইমেজরে কেন্দ্রে রাইখা। কইতেছেন, একটা বেগ-ধরেন, যেই কোনো একটা কিছুর সঞ্চালনের ভিতর দিয়া একটা বেগ জারিত হইছে, সেইটার আওয়াজে রাজপথ ফার্স্টে হইছে বধির, তারপর দুলে উঠছে। তো তারপরের লাইনে বোদলেয়ারের ক্যামেরার চোখ প্রেক্ষিত থিকা আস্তে আস্তে বিষয়ীর দিকে মেলে ধরতেছে নিজেরে, "কৃশতনু, দীর্ঘকায়, ঘন কালো বসনে সংবৃত/চলে নারী", আর তাতে ধরা পড়তাছে, বিষয়ীর বডি হইল চিকন, শে হইল লম্বা। কিন্তু আরেকটু ফোকাসড হইলে দেখা গেলো পেমিকা কালো পোশাকে ঢাইকা রইছে। আর এইটার ভিতর দিয়া একটা আকাঙ্ক্ষাময় কৌতূহল পাঠকে মহীয়ান কিংবা দর্শকে আরজুমান্দের মনে সেন্ধে দেয়ার ট্রাই করা হইছে যে তারা নড়াচড়া ফিসফাস শুরু করবে, আরে! এটা কে! এটা কেরে এমন শরীল লইয়া? তখন বোদলেয়ার ব্লার করা ক্যামেরা যেন ক্লিয়ার করলেন, "চলে নারী" কইয়া। অর্থাৎ একটা ইমেজরে পরিপূর্ণতা দিলেন বোদলেয়ার দোস্ত এই সমস্ত কইয়া। এরপরে পঙক্তিতে কইতেছেন, "শোকের সম্পদে এক সম্রাজ্ঞীর মতো।" এই লাইনটা বুঝতে বোদলেয়ারের কবিতার অল্প দর্শন বুঝা দরকারি। দুঃখ, শোক বা বিষাদরে বোদলেয়ার বন্ধু দেখতো একটা খনি বা ছাকনির মতো, যেইটার ভিতর দিয়া কবিতা ফিল্টারিং হইয়া, ঋদ্ধ হইয়া আইব। উনার একটা লাইনই আছে এমন, "হে দুঃখ, তুমি প্রাজ্ঞ হও।" আমরা এইখান থিকা বুঝতে পারতেছি তাইলে শোকের সম্পদের সম্রাজ্ঞী কইয়া কোবিদীয় ও মঞ্জুল এক উপমার কার্যকারিতা আমাদের দেখাইতেছেন। এরপরের লাইনে উনি ফরমাইতেছেন, "মহিমামন্থর হাতে ঘাঘরার প্রান্তটুকু তুলে।" মানে শোকের সম্পদের সম্রাজ্ঞী এমন ধীরে-সুস্থে এমন মন্থরতায় ঘাগরার নীচের অংশটুকু তুইলা ধরতাছেন, তার সৌন্দর্যে সেইটা হইয়া পড়তাছে মহিমাময়।

এখন হে ভন্দু আমার, আপনে এই সমস্ত ভাবেন মুহাম্মাদপুরের এক মাদ্রাসাছাত্রীরে ক্যানভাসে রাইখা, যার বিপরীত দিক থিকা এক পাঞ্জাবি পায়জামা পরা উদাস উদাস চশমা গায়ে আইতেছে এক মাদ্রাসাছাত্র। ভাবেন, এই মাদ্রাসাছাত্রের নাই কোনো নারীসঙ্গ, বাজে অভ্যাস, অন্য কোনো নেশাতুরা আইডিয়া, সে শুধু শুধু ভুলেভালে পইড়া ফেলছে বোদলেয়ারের এই কবিতাটা। সে যদি প্রাপ্তবয়স্ক হৃদয়সম্পন্ন কৈশোর শেষ শেষ করতাছে বা তারুণ্যে পা দিছে হওয়া পোলা হয়, তার বেকায়দায় পড়া অবস্থা লোকে বুঝবে কী কইরা! ওহে তালিবে ইলেম, দেখো কী কইতেছে তোমার বন্ধু বোদলেয়ার!

দ্বিতীয় স্তবক,

"সাবলীল, শোভমান, ভাস্করিত কপোল, চিবুক।
আর আমি-আমি তার চক্ষু থেকে, যেখানে পিঙ্গল
আকাশে ঝড়ের বীজ বেড়ে উঠে, পান করি, কম্পিতবিহবল
মোহময় কোমলতা, আর এক মর্মঘাতী সুখ।"

তাফসীরঃ- বোদলেয়ার বুজুর্গ তার সিনেনায়িকার কপাল আর চিবুকের কথা কইতাছেন, মসৃণ আর শোভাময়। মনে করেন, মাদ্রাসাছাত্রী একদিন নেকাব কপালের দিকে উচা কইরা বানছে, আর তা দেইখা মাদ্রাসা ছাত্রটা কী কইব কী লেখব করতাছে আর তখনই বোদলেয়ার মাদ্রাসা ছাত্র হইয়া উঠলেন উত্তমপুরুষে। উনি কন, আমি তার চোখ থেকে-এখানে আইসা মাদ্রাসাছাত্রীর চোখের হালকা একটা বর্ণনা দিয়া ফেলান মাঝে দিয়া-মানে নায়িকার চোখ এমন পিঙ্গল মার্কা আকাশ হয়া আছে মেঘের ভিতর দিয়া যেখানে তাকাইলেই ঝড়ের বীজ বাইড়া উঠব ক্বলবে-আর তা থিকা মাদ্রাসাছাত্রটা এমন সুধা, এমন অমৃত পান করে, যেই আরকে সিক্ত হয়া সে কাপতে কাপতে বিহ্বল হয়া পড়ে। বিহ্বল হয়া যেন তার আরো নেশা চইড়া যায়, ফলে সে মোহময় কোমলতার কমনীয়তার গেলাসে চুমুক দিয়া দিয়া প্রাণরে দুমড়ায়া মুচড়ায়া ফেলে এক বিষময় সুখে। আমি তো আগেই কইছি, মাদ্রাসাছাত্রী গো শুধু চোখ দেখা যায় নেকাবের মাঝ দিয়া। ওইটুকু দেইখাই ওদিক দিয়ে দেইখাই ছোটো ছোটো তরুণ হুজুররা তাগো প্রেমবৃত্তি, প্রেমশাখার জ্বলনের প্রশমনে আরো আগুন লাগায়ে দেন।

আচ্ছা, এরপরের স্তবকে বোদলেয়ার ইরশাদ করেন,

"রশ্মি জ্বলে...রাত্রি ফের!-মায়াবিনী, কোথায় লুকোলে?
আমাকে নতুন জন্ম দিলো যার দৃষ্টির প্রতিভা-
আর কি হবে না দেখা ত্রিকালের সমাপ্তি না হলে?"

রশ্মি জ্বলে- এই কথার ভেতর দিয়ে বোদলেয়ার বন্ধুটি মূলত রাতের গা তৈয়ার করতাছেন। মানে রাত যে আসতেছে তার পরিক্রমার প্রথম ধাপ। তারপর তিনি নিজেই কইতেছেন, "রাত্রি ফের"-মানে রাতের স্বভাবিক নিয়মটা যে আসছে প্রতিদিনকার নিয়ম মাইনে, তারই কথা। এখানে রাত মানে রাত যতোটা তার চেয়ে বেশি রাত নিজেই নিজের মেটাফরিক একটা আড়াল বা অন্ধকার। তো সেই আড়াল থেকে হাতড়ানোর মতো কইতেছেন, "মায়াবিনী, কোথায় লুকোলে?"

বোদলেয়ার দোস্ত মাদ্রাসার ছাত্রের বেদনার থিকা সময়ের আবর্তনে হঠাৎ দেখা আর তারপর ছাত্রীটির হারায়া যাওয়া বা লুকায়ে যাওয়ার ব্যাপারটাই দেখাইতেছেন। এরপরের লাইনটা সাবলাইম এক পঙক্তি। কবিতা যে আসলে কেন কবিতা হইছে আর বোদলেয়ার বন্ধুরে র‌্যাবো বন্ধু কেন কবিতার রাজা কইছে, তা এই লাইন পড়লে বোঝা যায়। "আমাকে নতুন জন্ম দিল যার দৃষ্টির প্রতিভা" এই লাইনটা যে কী পরিমাণ মহিমান্বিত, সেইটা যদি আপনি পেমে পইড়া পেমিকা/পেমিকের চোখের ভিতর দিয়া আবিষ্কার না কইরা উঠার মতো নাবালেগা থাকেন, তাহলে আপনারে বুঝাবার মতো প্রাণপ্রাচুর্য ওহে পাঠকে গরীব, আমার নাই। ধরেন, খুব নীচের লেয়ার থেকে ভাবি। একটা আলাভোলা পাঞ্জাবি পরা মাদ্রাসার তালেবুল এলেম, যার নিজস্ব সাজসজ্জার দিকে সামান্য তাকানিও নাই, সে শুধু এলেম আর আরবী শের নিয়া নিজের জগত তৈয়ার করছে। রাস্তায় হাটেও নানারকম কবিতা আর এলেমের প্রকরণ মুখে আউড়াইতে আউড়াইতে। সে এক তাকানির ভিতর দিয়া নবজীবন পাইলো। সে দৃষ্টি নেকাবের ভেতর দিয়া এত ধারালো, এত প্রতিভাময়, যেই তাকানির ভিতর দিয়া মাদ্রাসার হেয়ালি সন্তানটি সাধারণ সত্তা থিকা ব্যক্তিসত্তা সম্পর্কে সচেতন হয়া উঠলো। দেখে যে, আরে আমিও তো এক গুরুত্বপূর্ণ প্রাণব বস্তু! এরপরের লাইনে আবার সেই আড়াল থিকা সওয়াল করতে থাকে মাদ্রাসার হুজুর তরুণ, "আর কি হবে না দেখা ত্রিকালের সমাপ্তি না হলে?" ত্রিকালের সমাপ্তি মানে তো ক্বেয়ামত। মানে এইসব মানবিক যুগ পার হয়া আমাদের সবাইরে যখন এক খোলা চত্বরে কোয়ারেন্টাইন করা হবে, তখন হয়ত পরস্পরে আবার দেখা হবে।

শেষ স্তবকে আমার আহবাব বোদলেয়ার ইরশাদ করেন,

"অন্যকোথা, বহুদূরে! অসম্ভব! নেই আর সময় বুঝিবা
পরস্পর অজ্ঞতায় সরে যাই-আমারই যদিও
কথা ছিল তোমাকে ভালোবাসার, জানো তা তুমিও!"

এবার শেখ বোদলেয়ার তার তৃতীয় স্তবকের খোজনরে আরো বিস্তার করেন। যখন দেখেন মাদ্রাসার ছাত্রটা তার বোরকাওয়ালি পেমিকারে আর খুইজা পাইতেছে না মুজতবা আলীর শবনমের মতো, তখন তিনি কন, "অন্যকোথা, বহুদূরে! অসম্ভব!" মানে শে-পেমিকাটির সঙ্গে দেখা হওয়া কি অসম্ভব হয়ে দাড়াইছে, অনেকদূরে কিংবা অন্যকোথাও কি তার সংস্থান হয়ে গেছে! "নেই আর সময় বুঝি-বা" দিয়া কি আমরা এইটাও বুঝতে পারি না যে, মাদ্রাসাছাত্রীর ছুটি হয়া যতো সময় চইলা গেছে মাদ্রাসা ছাত্র'র আসতে আসতে তাতে কইরে মাদ্রাসা ছাত্রী দেখা হওয়ার সীমানা ছাড়ায়ে এতদূর চইলা গেছে, তাতে দেখা হওয়াটা অসম্ভব হয়া দাড়াইছে!

পরের লাইন "পরস্পর অজ্ঞতায় সরে যাই।" মৌলানা হইতে যাইতে থাকা চ্যাংড়া মৌলবীসাব তার পেমিকারে তো খালি নেকাবের দুই ইঞ্চি ফাক দিয়া দেখতেই অভ্যস্ত, ফলত একদিন হুজুরনী পেমিকা যখন তার অনেক সখীর সঙ্গে একত্রে বেরোইলো, সে আর চিনতে না পাইরা আলাদা হয়া গেল, আর দেখা গেল তা প্রতিদিনই হইতে লাগলো। এই ধরণের বিচ্ছেদমূলক কর্ম প্রতিদিনই সাধিত হইতে থাকায় তরুণ মোল্লা কইতেছেন অত্যন্ত বিষাদের সুরে, আমরা যেহেতু চিনতেছি না একে অপররে, ফলত না চেনার অজ্ঞতায় সরে যাচ্ছি, অথচ কথা তো ছিল "আমারই যদিও/তোমাকে ভালোবাসার, জানো তা তুমিও।" শেষ লাইনের ভিতর দিয়া মা'না তাহলে দাড়াচ্ছে গিয়া বিচ্ছেদে। অর্থাৎ বোদলেয়ার হযরত কীভাবে বুঝলেন চিরাচরিত পেমের নিয়মটা, যা এই নেকাব আর টুপী ওয়ালাদের ভিতর দিয়া গিয়া একটা অসম্ভব সম্ভাবনা তৈয়ার কইরা দিয়া, নায়ক-নায়িকাগোরে একটা তীব্র আনন্দ দেয়ার মধ্যে দিয়া ট্রাজেডিতে গিয়াই পৌছাইতেছে পরিপূর্ণ না চেনায়।

এই কবিতাটা হে মাশুকে মাজলুম তোমারে এই নসীহতই দেয় যে, পেমিকা-যার কাছ থিকা তুমি নিতে পারো অপূর্ব আস্বাদ, তাঁকে চিনো ভালো কইরা, তারে জড়ায়ে নেও এক তীব্র সহগের কুসুমে।

লেখা পাঠানঃ chilekothasahitto@gmail.com

মন্তব্যসমূহ

  1. আমি যাস্ট মুগ্ধ, বা বলা যাইতে পারে, একটা গদ্য— যা কিনা পুষ্পের পাতায় পড়েছিলাম কৈশোরে, নতুন কইরা, নতুন বিষয় আর একটা বিস্তৃতি পাওয়া গণ্ডিতে এইখানে পড়লাম৷ এইরকম গদ্যরে আসলে কী কওয়া যাইতে পারে? আমারে একরকম সমৃদ্ধিবোধ দিছে এই গদ্য। আমি বোদলেয়ারের কবিতার ব্যাপারটা দেখলাম না, আমার কাছে মুখ্য হয়া উঠছে এক চ্যাংড়া মৌলবীর মুগ্ধতা, প্রেম, অপক্কতা ও আলাভোলা অসহায়তা— প্রেমিকারে আলাদা করতে না পারা। ধন্যবাদ গদ্যকার। এমন লিখতে থাকেন।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

দেশসেরা বুকশপ থেকে কিনুন চিলেকোঠার বই

চিলেকোঠা বেস্ট সেলার বইসমূহ

‘নক্ষত্রের খোঁজে’ প্রতিযোগিতা ২০২২ এর নির্বাচিত বই