চিলেকোঠা ওয়েবজিনে প্রকাশিত সাহিত্যকর্ম ও অন্যান্য

বহিষ্কার

bptzhcPndh_4QleXEzZVT0aJVO1TQcMjwVM3hlQ2qWT4iGuwLq2KOXrVglaufwjJTS-C2pVwRW0sFeXgnoVmyhxfGofDusu4X94YP923rr2fsUszpB3OV5XYlOFjYAuqh5WFoKhuShNkNJ1gMJibUUSsgpDwUQObirxu2_7HoCenuZxP3YS_VkHwSy2-Lre1rvE2EvtcCIBKvIyT4jimSZLhxey1aTuDctLDeAw4SKAAhmCJnrU_U5zx7fOrG4N3g5S5otjYwBHeUYS7ybypX4ujlOQ793VLs5eO2KrLSzZNn9tzMNdF3cYbCw-4SUsZEScEr8MdEmYjGAsx--FTYPiPgnpRGFh-aTtsXHCCHZqKBames8pCQriUbP3oqQjuaTFGMh6lOBUnIbUX_PtVf5OGbxSATq4o-HAe48zWc6cxhiqHOHS2vTC2czXjwM2fd7I4nv2ok8pClZwJFLq4Uy2yLLI-pObpLh83EqnmL7te4u46KDjcDfUeqqVHBzHoCaiZpbLUtMbioidb-0bFbqltsrj9PIU9im3fbAYQogm9jLyPpMtAIxYx86hiVeTCI6b1O86BcBbcNwf6HRaIMYYLq9bYEYBdKC9uy0kWMMzzTITU-8GeihJV0CruBZp-VyvcaezLEMBV0htv4qGGRs9ay5HSA3UxolQQ-yb9paPvxESUqV6v9X0mJgK0rzTvrGgmHz5nMfw_46C-mAFsOOyS2hZD5TzmhVTPeyF4yLxuvBE_aFbeiyUfvp2uC3TLD-p3x0SNjcNavoX29Ihly-KD9z4JvBzVuiVGLLSJs-52mIxA1Jn8A76sZpUiIt9uMUd7Nc67u3hif3IYgjWpeKTts75vhilVWOuBJJqOg0wU9-H3wOxo2pkDzPLkRnVUJ8Gk3_Dgq5p4NxRLKxNw3mTQb6vK4lxi1KEv75UJQe1wskVo4374PxscgGaA1xxa3SE3SB5N_dg7WLt5rKTJ=w433-h629-s-no 

বহিষ্কার (পেপারব্যাক)

হুসাইন হানিফ

মূল্য: ২৫০/- ২২৫/- *Save ২৫ Taka (10%)

গল্পগ্রন্থ

পৃষ্ঠা: ৯৬

প্রথম প্রকাশ: ২০২৩

ISBN: 978-984-97081-3-1

কিছু পৃষ্ঠা পড়ুন অনলাইনে অর্ডার করুন সরাসরি অর্ডার করতে হোয়াটসএপে মেসেজ করুন

বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকে:

কখনো কোথাও থেকে বহিষ্কার হবার অনুভূতিটা কেমন? সামান্য অপরাধে বা আদৌ অপরাধ নয়, কৈশোরের নিছক কৌতুহলে যখন বহিষ্কারের মতো জীবন উলট-পালটকারী সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া হয় কারো ওপর, কেমন লাগে তার? কিভাবে ভেঙে-চূড়ে নতুন ছাঁচে গড়ে তার মন?

এসব নিয়েই নাম ভূমিকার গল্প- ‘বহিষ্কার’। সার্বিকভাবে গল্পগ্রন্থ বিষয়ে গল্পকার আমাদের জানান-

“আমাদের ছোট্ট খেলাঘরে ভীষণ আলোস্বল্পতা। জমানো কিঞ্চিৎ আলোয় দেখা যায় কদাকার মুখগুলো। বিদ্যুৎ চমকের মতো কিছু আলো হঠাৎ ভেতরে এলে কদাকার মুখগুলো যেন ম্যাজিক দেখায়। মুহূর্তে বদলে যাচ্ছে বীভৎস খোলস। তারপর প্রদর্শিত হচ্ছে সুবোধ ও সুশীল কিছু সংলাপ। অথচ কণ্ঠের ভারে ঝুলে আছে নিস্তব্ধ অন্ধকার। আমাদের ভেতরে মনুষ্যত্ববোধ প্রধান হয়ে উঠলে হঠাৎ মনে হয়, এসব কি অমানবিকের মত দেখতে মজার ও নেশাতুর কোনো ম্যাজিক? অথচ জাদুবাস্তবতার মতো দেখতে নিরেট বাস্তবতা, শরীর গুলিয়ে ওঠা বিষম ক্ষত। তবু সমাজে যত্নে তা পালিত হয়, সুপ্তভাবে লালিত হয় মননে। গল্পের চরিত্রগুলো এমন নিরেট বাস্তবতার ভেতরে বসবাস করে। এইসব আখ্যানে যাপিত জীবনের অভিজ্ঞতালব্ধ যে নির্যাস, তা পাঠককে ব্যাকুল করে তোলে, গা ঘিনঘিনে বাস্তবতার সামনে অস্বস্তি আনে। যেন চোখে আঙ্গুল দিয়ে সমাজের স্বরূপ চেনায়।”


লেখক পরিচিতি:


হুসাইন হানিফ

জন্ম: ১৯৯৯, সারিয়াকান্দি, বগুড়া

বর্তমান পেশা: ফ্রিল্যান্স বুক ডিজাইনার

অত্যন্ত সচেতন লেখক হিসেবে লেখায় ইতিমধ্যেই তৈরি করেছেন নিজের আলাদা একটি ভাষা। তার বয়ানভঙ্গী পাঠকের জন্য অস্বস্তি তৈরি করে। ফলে পাঠক তাঁকে পাঠ করতে বাধ্য হন অত্যন্ত সতর্কতার সাথে। তাঁর গল্প যেন চোখে আঙ্গুল দিয়ে সমাজের স্বরূপ চেনায়। শিল্পভাষা ও কারুকার্য বিষয়ে সচেতন বলে হুসাইনের গল্প উপভোগ্য হয়ে ওঠে দারুণভাবে।

যোগাযোগ: hossainhanif57@gmail.com


রিভিউ:

১.

এই মেলার একমাত্র বই যেটা হাতে পেয়েছি। গল্পকার হুসাইন হানিফের ‘বহিষ্কার’। হাতে পেয়ে, নতুন বইয়ের স্বাদে-গন্ধে আরেক দফা পড়া হয়ে গেলো। পড়তে পড়তে মনে হলো, গল্পগুলো ওষ্ঠাগত জীবনের করুণ কিছু আখ্যান। সেসব জীবন যেন মানুষের সাথে দেখা না হওয়া জীবন। অথবা, যেসব জীবন মূলত আরো অধিক মানুষের, যা চিরন্তন, সারবস্তু৷ মেকি সভ্যতায় বসে এসব আখ্যান দেহে-মনে ঘিনঘিনে ঝাঁকুনি আনে। সমাজের আদি ও প্রকৃত স্বরুপ চেনায়। হুসাইন হানিফের এটি প্রথম গল্পগ্রন্থ। বিভিন্ন সময়ে গল্পগুলো লেখা বলে, একজন তরুণ গল্পকার হিসেবে তার ভাষা ও গদ্যে ভিন্নতা আছে। কিন্তু শাণিত বোধের জায়গাটা অটুট, একতাবদ্ধ। প্রাণের উৎস থেকে কিভাবে গল্প বলা যায় সে চেষ্টা তার প্রবল। সর্বাগ্রে তার সাফল্য হোক, সে প্রত্যাশা করি।

একটা সংযুক্তি দেয়া যেতে পারে যে, বইটির প্রচ্ছদ করেছিলাম আমি। ইলাস্ট্রেশন আগে থেকে করলেও প্রচ্ছদ হিসেবে এটা প্রথম কাজ।’

  সুবন্ত যায়েদ, কথাসাহিত্যিক ও গ্রাফিকস ডিজাইনার, রাজশাহী

২.

একটু আগে পড়ে শেষ করা লেখক হুসাইন হা‌নি‌ফের ‘ব‌হিষ্কার’ গল্পগ্রন্থের গল্পগু‌লোর গভীরতায় ডু‌বে আছি। বেশ কিছু গল্প আমার ম‌স্তি‌ষ্কের নিউর‌নে ধাক্কা দি‌য়ে‌ছে। সোজাসাপ্টা সরল বর্ণনাশৈলী দি‌য়ে জীবন‌বো‌ধের চিৎকারটা গল্পকার চমৎকারভা‌বে তু‌লে এনে‌ছেন। শ‌ব্দের সাঁ‌কো‌তে জু‌ড়ে‌ছেন জীবন নদীর অব‌লো‌কিত অভিজ্ঞতা। হুসাইন হা‌নি‌ফের গল্পগু‌লো সমাজ‌কে ধাক্কা দি‌তে সক্ষম। ‘ব‌হিষ্কার’ গল্পগ্রন্থ পা‌ঠে ম‌নে হ‌লো লেখক হুসাইন হা‌নিফ সমা‌জের ‌বিষ‌ফোঁড়া কূপমন্ডূকতার বিরু‌দ্ধে আওয়াজ তু‌লে নি‌জের গন্তব্যের দি‌কে ছুট‌তেই তি‌নি এসে‌ছেন।’

  জুয়েল বড়ুয়া বাপ্পু, কবি ও কথাসাহিত্যিক, চট্টগ্রাম

৩.

হুসাইন হানিফের পেচালের বই ‘বহিষ্কার‘ পড়লাম। এক শোয়ায় পইড়া ফালায়া একখান অসভ্য বিকাল শুধু শুয়া থাইকা কাটায়া দিলাম। আমি বইসা থাইকা বই পড়তে থাকলে যখন ভূতে পায়, ভূতগুলা কেমনে কেমনে আমারে জব্দ করতে থাকে তখন আমি সিরিয়াস হইবার লাগলে ভূতের লগে ভূতছাড়ানোর মন্ত্র জারি রাখতে গিয়া চিৎ হয়া আধশোয়া অবস্থায় বইটারে ধমকাইতে থাকি: বইয়ের ভিত্রে নানান কিসিমের আঁকিবুকি দোয়াতাবিজ আঁইকা আঁইকা আওগাইয়া যাওনের সাহস রপ্ত করতে থাকি। এইরকম পড়ার আদবকায়দাগুলা হইল আমার বদখাইছলত: অনেকটা হানিফের ফিকশনের মতো বদখাইছলত। এইগুলা হানিফের কথাবার্তাগুলা হইল থকথকে কাদামাটির ভয়ানক কষ্টকাতর অসভ্য দারিদ্রের দমবন্ধকর আত্মজৈবনিক, পক্ষান্তরে গোষ্ঠীজৈবনিকের আড়ালে ছাপায়া উঠতেছে মাদ্রাসাপাড়ার গাঝাড়া দিতে থাকা কুত্তা কুত্তা অপরাধবোধের অন্ধকার ঝলসানো গলিঘুপচি। হুসাইনের পেচালের এইগুলাতে গল্প বলার মুন্সিয়ানার তাগদ পাইতেছি: মাগার পেচালগুলার শরীরে কোনো মায়াজাদু প্রেমরোমাঞ্চের লেশ মাত্র নাই। যার কারণে বইটা শেষ হইছে ‘বাল‘ শব্দের উস্কানি দিয়া। আবাল জনতার চিরায়ত জীবনটা হইতেছে অমীমাংসিত বাল। বালছেঁড়া মানুষগুলা ঠিক বুঝতে পারে না এই মহার্ঘ্য বালফালাইন্না জীবনগুলা লয়া কেমনে কী, কেমনে জীবনডারে খেলাইতে হইবে, সেই বালের হদিস কারো আয়ত্বে নাই। এইরকম নিয়ন্ত্রনহীন জীবনের ভিত্রে, গল্পগুলার হোগার আন্ধারে রইয়া গেছে আরো আরো সুঁইবুননের জমিন, সেই জমিনে আচ্ছা মতন কোপ বসানোর রাগ উথলায়া উঠলেও হানিফ কোথাও কোথাও যুতমতন কোপ বসাইতে পারে নাই: কারণ কোপাইতে গিয়া হানিফ সহসা অভিমানী হয়া ‘বাল‘ বিষয়ক হতাশ্বাসের গোয়ার গিঁড়ায় হাঁটু গাইড়া বইসা গরুর লাহান ভেলভেলাইয়া তাকায়া থাকে: তারপরও বলিতে হইবে হানিফ কেমনে কেমনে গল্পের ভিত্রে চেনাজানা মানুষের চেহারার জাল বিছাইতে গিয়া কয়েকখান গল্পে নিরীক্ষার চাকু চালায়া দিতেছে অনেকটা কোরবানির গরুর গলা কাইটা নেওয়ার বাহাদুরির মতো: ফলে অনিবার্য ভাবেই হানিফ গল্পগুলার জমিনে সুযোগ তৈয়ার কইরা দিতেছে ভেজা ঘাসের জাজিমে আরো আরো চোখের দেখন উস্কায়া দেওয়ার। 

সেই কথায় না যাই, সবচেয়ে বড়ো কথা হইতেছে এইরকম একটা পেচাল, যেইগুলা কিনা বাঙালি গ্রামীণ জীবনের প্রাত্যহিক মনছবি। এই সময়ে এইরকম বস্তুছবি আর মনছবির মাখামাখিতে হাতেগোনা কয়েকখানা গল্প আমার নজর কাড়তে পারছে। সেই গুলার ভিত্রে ‘বাচ্চু’ খানিকটা আগায়া থাকতে চাইতেছে। চলমান সময়ে কাহিনি আলাপীদের ভিত্রে এই ‘বাচ্চু’ এমন একখান গল্প যেইখানে আখ্যান আর চিন্তার মিশাল আমাকে খোঁচায়া খোঁচায়া গরু বানায়া দিতেছে। গরু = মা = পেটেধরা রুটিরুজির অনিবার্য বাস্তবতা > হিন্দু + মুসলমান + খ্রিস্টান—এইগুলারে জড়ায়া পেচায়া হাঁটবার লাগছে নির্দোষ যৌনতা। আর এইরকম যৌনতার চোখমুখের বচনগুলা যখন অনিবার্য প্রাত্যহিকতায় আগায়া যাইতেছে তখন ওইগুলা আর উসকানিতে আটকায়া থাকে না বরং হয়া উঠতে থাকে চারিদিকে লুকায়া থাকা কালচার। যেই সহজাত কালচারগুলা ব্যক্তিমানুষের ভিতর দিয়া ফাইট্টা বাড়াইতে বাড়াইতে হয়া উঠতেছে সামষ্টিক। অর্থাৎ এইগুলা হইল ওই জনগোষ্ঠীর সমাজমনস্তত্ত্ব। এবং সহসাই গল্পের শেষে গিয়া মা ওছিমা হয়া উঠতেছে সমাজমনস্তত্ত্বের সামষ্টিক প্রতিনিধি।🖤 গ্রেট 🐌 বুকে আসো। আমার চক্ষের নাগালে আইসা খাড়াও: আমি যেনবা বাচ্চুর মতো দম আটকায়া রাখা কান্দনের ভিত্রে হান্দায় যাইবার লাগছি!’

 শিমুল মাহমুদ, কবি, কথাসাহিত্যিক, ক্রিটিক ও শিক্ষক, রংপুর

৪.

হুসাইন হানিফের প্রথম গল্পবই 'বহিষ্কার' পড়লাম। প্রথম গল্পবইয়েই হানিফ নিজের কন্ঠকে চিহ্নিত করতে চেয়েছেন। এতে তার সফলতাও আছে। গল্প বর্ণনার প্রথাগত কৌশলের আশ্রয় না-নিয়ে তিনি নিজস্ব কৌশল অবলম্বন করেছেন। গল্পের কাহিনিতেও রয়েছে ভিন্নতার ছাপ। তার গল্পের চরিত্ররা মাটিলগ্ন। এদের জীবনাচরণ, নানাবিধ দ্বন্দ্ব গল্পের অবয়বে স্থান পায়। হুসাইন হানিফের ভাষার ব্যবহারও লক্ষ্যণীয়। প্রমিত ভাষার চেয়ে মুখের ভাষাকে তিনি গল্পের ভাষা হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এটা তার সচেতন প্রয়াস বলেই মনে হয়। হুসাইন হানিফের জন্য শুভ কামনা।’

 শামসুল কিবরিয়া, কথাসাহিত্যিক, বইকথার সম্পাদক ও শিক্ষক, সিলেট

৫.

হুসাইন হানিফের 'বহিষ্কার' গল্পগ্ৰন্থটা পইড়া আবার আমি উচ্ছ্বসিত হইলাম। বইটাতে বারোটা গল্প, সবকটা গল্পই সেরা। পইড়া মনে হইলো গল্পকারের পরিমিত জ্ঞান আছে। গল্পে একটা কথা বেশিও বলে নাই, আবার কমও বলে নাই। গদ্যও দারুণ, পড়তে আরাম আছে।

গল্পগুলোকে দুইটা ভাগে ভাগ করা যায়। একটা ভাগ হলো একটা মাদ্রাসা ছাত্রের মাদ্রাসায় থাকাকালীন তিক্ত অভিজ্ঞতা। এই তিক্ত অভিজ্ঞতার সাথে সমাজ বাস্তবতা সমানভাবে হাজির। একের পর এক নিদারুণ বর্ণনা। আভ্যন্তরীণ এবং পারিবারিক লড়াই হাজির, হাজির 'না' করতে পারার অমোঘ সঙ্কোচ, সহজেই গ্ৰহণ করতে না পারার দ্রোহিতা, মিথ নিয়ে ঠাট্টা মশকরা।

আরেকটা ভাগে আছে প্রান্তিক মানুষের গল্প। প্রান্তিক মানুষের আত্মার আহাজারি, পরিবারের কলহ-কোন্দল থেকে অবহেলার তীব্র যাতনা, সাংসারিক ঝুট ঝামেলা, প্রেম-যৌনতা, দীর্ঘকাল সন্তান না হওয়া মায়ের সন্তান হারানোর বেদনা, অভাবের দরুন নির্দয় বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়া মানুষের জীবনের ঘিনঘিনে কাহিনী।

হুসাইন হানিফের গল্প ডেলিভারিও ভালো। খেই থাকে। আমি ঠিক করেছি এমন ভালো একটা বই আমার দুই তিন জন বন্ধুদেরকেও পড়তে দেব। মতামত নেব। আর এতো ভালো গল্প লেখার জন্য লেখককেও শুভেচ্ছা।’

 মুরাদ হাসান, কবি, চিন্তক, কিশোরগঞ্জ

৬.

বইটির সন্ধান পাই কোন একজন পোস্টকারীর কমেন্টবক্সে। ফ্ল্যাপের লেখাগুলো ছিলো অসাধারণ। বেশ আগ্রহী হয়েই বইমেলা থেকে বইটি সংগ্রহ করি। তবে প্রথম দুই, তিন পৃষ্ঠা পড়ার পর রীতিমতো আশ্চর্য হই। সাথে প্রচন্ড মেজাজ খারাপ। এসব কি ভাষা! মানে এতো খোলামেলা ভাবে কথাগুলো লেখা। গালি দেওয়া থেকে শুরু করে সবকিছুই। সত্যি বলতে তখন মন চাচ্ছিলো বইটা ছিড়ে ফেলি। অথবা বইটা আর না পড়ি। তবুও ভাবলাম দু, তিন পৃষ্ঠা পড়ে জাজ না করি। ধৈর্য ধরে পুরোটা পড়লাম। পরের গল্পগুলো, শব্দচয়ন সত্যি আমাকে মুগ্ধ করেছে। চিন্তা, চেতনা সবকিছুতেই আমি স্ট্যাটিসফাইড। কিন্তু আবার লাস্টের দিকে এসে সেই পূর্বের রিয়্যাকশন।

তবে লেখক এ গল্পে অস্পষ্ট কিছু ইঙ্গিত কি দিয়েছেন? ঠিক বুঝলাম না। যেমন তার ছোটবেলায় নামাজ পড়তে মন চাইতো না। হিন্দুদের প্রতি তার অন্যরকম টান অনুভব হতো। মাদ্রাসা তার ভালো লাগতো না। হুজুরদের খারাপ দিক গুলো তুলে ধরা, সাথে সাথে ইসলামের নিষিদ্ধ বিষয় গুলো কেনো নিষিদ্ধ এ নিয়েও তার প্রশ্ন, তার ঘোর আপত্তি। সবচেয়ে বিরক্তিকর লেগেছে তার সমকামীতা সার্পোট। সার্পোট ঠিক বলতে পারছিনা তবে এটা তার ভালো লাগতো! কি আশ্চর্য!  

পরিশেষে বলবো, লেখকের এসব অস্পষ্ট জিনিস আমাকে ভাবিয়েছে। এতো খোলামেলা অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ আমাকে বিরক্তিতে ফেলেছে। মাঝখানের গল্পগুলোর ইমাজিনেশন, শব্দচয়ন, গল্পের গাঁথুনি আমাকে মুগ্ধ করেছে। বইটা কিনে আমার যে খুব একটা লাভ হয়েছে তা নয় আমার পয়সা নষ্ট তাও না। অবশ্য আমি কোন বই কিনে ভালো না হলে টাকা নষ্ট এসব ভাবিনা। আমার মতো খুবই নগন্য একজন মানুষের ব্যক্তিগত খারাপ লাগা তে লেখকের কিছু যায় আসবেও না। তবে আমার মতামত আমি তুলে ধরলাম। আমার এলোমেলো লেখাগুলোর ভুল ত্রুটি ধরিয়ে দিবেন। খারাপ লাগলে ক্ষমাপ্রার্থী।’

 শারমিন সুমী, পাঠক, গাজীপুর, ঢাকা

৭.

১. প্রত্যেকেই আমরা আমাদের যন্ত্রণার কাছে অবোধ উলঙ্গ শিশু।

বাক্যটি 'মৃত্যুযাত্রা' গল্পের। এরকম চমৎকার বাক্য আরও রয়েছে বইটিতে।

২. আমি চমৎকৃত তার ভাষার উপর দখল দেখে। ঢংটা ধ্রুপদী এবং সাবলীল। পড়তে আরাম লাগে। 

৩. আঞ্চলিক এবং প্রমিত-ভাষা-বিন্যাস এর অপূর্ব মিশ্রণ তার বয়ানকে একেবারে নতুন একটা ধরন আর গড়ন দান করেছে।

৪. তার সাহস দেখে চমকে গেছি আমি। এমন সব বিষয় নিয়ে অকপট উচ্চারণ করেছে; বিস্মিত হই। বিস্মিতি কাটে না সহজে।

৫. কিছু কিছু ক্ষেত্রে গল্পের সূত্র মিসিং হয়েছে বলে মনে হয়েছে বা জোড়টা শক্ত হয়নি। এটাও মনে হয়েছে, চরিত্র কোনো কোনো ক্ষেত্রে পূর্ণতা পায়নি। তবে এসব ত্রুটি মাত্র দুএক ক্ষেত্রে এবং এসব ত্রুটি খুব দ্রুতই কেটে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। এই বিশ্বাসের কারণ, তার লেখাতেই প্রকাশিত তার বিশাল আকাঙ্খা আর শক্তির আভাস।

৬. উৎসর্গপত্রে আমারও নাম রয়েছে এটা আনন্দদায়ক। এটা বেশি আনন্দের হয়েছে এ-কারণে যে, ব্যাপারটা জানতে পেরেছি বইটা খোলার পর।’

 আনিফ রুবেদ, কবি, কথাসাহিত্যিক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

৮.

হুসাইনের গল্প আনন্দের বদলে অস্বস্তি তৈরি করে পাঠকের জন্য। ঠিক এ জায়গাটাতেই “বহিষ্কার” গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। কেননা আমাদের পাঠরূচি আনন্দ ও সময় কাটানোর ঘেরাটোপে আটকে যাওয়ায়, সাহিত্য যে চিন্তাশক্তিকে কাজের লাগানোর সবচেয়ে জোরালো উপায় সেটা আমরা ভুলতে বসেছি। বহিষ্কার গল্পগ্রন্থের মাধ্যমে হুসাইন আমাদের এটা মনে করিয়ে দেন। যদিও কথাসাহিত্যিক হিসেবে তার জাত এ বইয়ে চেনা যায় তবু এখানে যে গল্পগুলো আছে তার কোনোটা যে বাংলা সাহিত্যের দীর্ঘ পথে টিকে থাকবে এমন মনে হয়নি। বরং মনে হয়েছে, এ বইটা তার ভবিষ্যতের মহৎ কোনো সাহিত্যকর্মের প্রস্তুতি পর্বের রচনা। হুসাইনের জন্য দোয়া ও ভালোবাসা।

হুসাইন, আপনি অনেকদূর যাবেন, কিন্তু ‘বহিষ্কার’-এর স্তুতিসমূহ আপনাকে যেন অবশ করে না ফেলে। বরং এটা আপনার ক্ষুধা বাড়াক, সামনের দীর্ঘ পথের স্বপ্ন দেখাক। আরো আরো বড় আকারের ক্যানভাসে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে টিকে যাবার মতো কাজ বেরুক আপনার কলমে।

 আখতার মাহমুদ, লেখক (পশ্চিমের পিতা), রাঙামাটি


মন্তব্যসমূহ

দেশসেরা বুকশপ থেকে কিনুন চিলেকোঠার বই

চিলেকোঠা বেস্ট সেলার বইসমূহ

‘নক্ষত্রের খোঁজে’ প্রতিযোগিতা ২০২২ এর নির্বাচিত বই