সাহিত্যের দ্বিতীয় জগৎ । জাহাঙ্গীর চৌধুরী
লেখালেখিতে এক সময় বিদ্রোহ উঠতো। মানুষের মন পরিবর্তন হতো। লেখালেখি ছিল তখনকার ধারালো হাতিয়ার। কলম ছিল বড় অস্ত্র। এখন? লেখায় কেউ পরিবর্তন হয়না। লেখায় তেজ নেই। কবিতায় দ্রোহ নেই।
ছড়ায় আগুন নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধে প্রাণ নেই। এখন সব মেকি আবেগ। সস্তা প্রেম। তৈলাক্ত চাটুকারিতায় ভরপুর লেখা। লেখায় কিছুই হয়না। তবুও লিখি। সময় কাটাতে লিখি।মন হালকা করতে লিখি। কারো ভালো লাগুক না লাগুক নিজের সময়টাতো ভালো কাটে! ছড়া লিখি,লিখি নিবন্ধ,প্রবন্ধে হাত বুলাই। রম্য রচনায় ধ্যান দিই।
আর কবিতা থাকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে... গভীর আবেগ থেকে সৃষ্টি হয় কিছু ভাবযুক্ত ছন্দময় কথা। সেই কথাগুলোই কবিতা। কবিতা ভাবায়। কবিতা কাঁদায়। কবিতা হাসায়। কবিতা জাগায়। কবিতা পড়তে আবেগ লাগে, বুঝতেও আবেগ লাগে। আর লিখতে ভাব লাগে! আমাকে দিয়ে কবিতা হয় না। হয়তো আমার মনে ভাবের অভাব। বাস্তবতার আঘাতে আঘাতে মাঝে মাঝে মন জিনিসটা কি সেটাও ভুলে যাই। ভুলে যাওয়া সেই মনটাতে ভাব আসবে কোথা থেকে!
আমি ছোট ছোট নিবন্ধ লিখি। সময় পেলে রম্য রচনাতেও হাত দিই। আর ছড়া আমার নেশা। কেউ পড়ুক না পড়ুক ছড়া লিখতে বেশ লাগে। ছড়া আর কবিতা উভয়টাই ভাব ও আবেগ কেন্দ্রিক। তবে কবিতার ভাব প্রতি লাইনের গভীরে। ছড়ার ভাব তার ছন্দে। সব কবিতা ছন্দনির্ভর নয় কিন্তু সব ছড়া-ই ছন্দনির্ভর। ছড়া সহজেই বুঝা যায়। ছড়াকারের মনের কথাটা বুঝতে সময় লাগেনা। আর মনহীন ছড়াকার হলে তো কথাই নেই!
সব চেয়ে বড় কথা হচ্ছে, মানুষ চাইলেই লেখালেখি করে কিংবা অন্যদের লেখা পড়তে পড়তে নিজেকে এই জগত থেকে অন্য একটা জগতে ট্রান্সফার করে নিতে পারে। এ জগত যাদের জন্য দুঃখের তাদের জন্য আরেকটা জগত তো খুবই প্রয়োজন। আমি না হয় সেই জগতেরই একজন।
লেখা পাঠান ই-মেইলেঃ chilekothasahitto@gmail.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন