কান্না । হোসাইন শাওন
ব্যস্ত পথে চলতে গিয়ে
একটু থমকে দাঁড়াই,
ছোট্ট ছেলের কান্নাটা যেন
হৃদয়ে নাড়া দেয় ।
বয়স আর কতই হবে,
পাঁচ কিংবা ছয়,
শীর্ণ দেহে জীর্ণ পোশাক
বুকের পাঁজর দেখা যায় ।
রাস্তার ধারে কাঁদছে বসে,
পা দুখানি মেলে,
একা মনে ভিজছে যেন
সকরুণ নয়ন জলে ।
কাছে গিয়ে জিঞ্জাসিলাম,
কাঁদছো কেন খোকা ?
বাবা - মা কোথায় তোমার,
কেন এখানে তুমি একা ।
বলল ছেলে, জম্মের পর চোখে দেখিনি,
বাবা আমার কেমন!
মা - ই আমার জীবন মরণ
মা - ই হল আপন ।
ঐ বাড়িতে কাজ করে মা,
ঐ বাড়িতেই খাটে,
সকাল বেলা বেরিয়ে পড়ে
ফিয়ে যে মা রাতে ।
তিন দিন হল সেই যে গেল
ফিরল না মা বাড়ি,
মাকে খুঁজতে খুঁজতে আমি
এসেছি বাড়ি ছাড়ি ।
দুই সকালে, দুই দুপুরে
এবং দুটো রাতে,
এক মুঠো ভাত এখনও যে
পেটে নাহি জোটে ।
বাবুদের বাড়িতে কিসের যেন
মহা আয়োজন,
ক্ষিদের জ্বালায় গিয়েছিলাম
যদিও পাইনি নিমন্ত্রণ ।
ছেড়া জীর্ণ কাপড় দেখে সবাই
তাড়িয়ে দিল আমায়,
আশা করে গিয়েছিলাম
তবু খেতে নাহি পাই ।
এঁটো খাবার ফেলছে তারা
খাবার শেষ হলে,
আবার একটু দাঁড়িয়ে যাই,
কুড়িয়ে আনব বলে ।
পাজি কুকুরগুলো তা ও দিল না,
খেয়ে নিল সবটা ,
ঘেউ ঘেউ করে তাড়াল আমায়,
পেলাম না কিছুটা ।
ক্ষিদের জ্বালায় এথায় বসে
কাঁদছি আমি তাই,
সবাই আমায় পর করিল,
মোর কষ্ট দেখার কেউ নাই ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন