অভিশাপ মুক্তির আবেদন...... । শামীম আহমদ তালুকদার
বেকারত্ব মানব জীবনের এক দুর্বিষহ অভিশাপের নাম। বেকার মানুষ দেশ ও জাতির বোঝা। নিজের কাছে সে অপরাধী, অপরাধী পরিবারের কাছেও। বেকার জীবনের গ্লানি বহন করা সত্যিই দুরূহ। অস্বাভাবিক বেকারত্ব যে কোনা দেশের আর্থ সামাজিক উন্নতির পথে এক দুর্লঙ্ঘ বাধা। তাই ব্যক্তিত্বের বিকাশ, আত্মশক্তি ও আত্মমর্যাদা এবং জাতীয় উন্নতির স্বার্থে বেকারত্ব লাঘবের সমন্বিত প্রয়াস জরুরি।
অর্থনীতির পরিভাষায় বেকার সেই, যে কাজ করার যোগ্যতা ও ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কর্মসংস্থান বা কাজের সুযোগ পায় না। সমাজ বিজ্ঞানে বেকারত্ব এমন এক সামাজিক অবস্থার নাম যখন সমাজের যথেষ্ট কর্মক্ষম ব্যক্তির বিপরীতে কর্ম সুযোগ থাকা খুবই কম। বাংলাদেশে সামাজিক সমস্যাগুলোর মধ্যে বেকারত্ব অন্যতম। একটি তথ্য মতে কর্মক্ষম লোকের ২৭.৯৫ শতাংশ বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত। বাংলাদেশে যে চরম বেকারত্ব বিরাজ করছে, তার পেছনে অনেকগুলো কারণ বিদ্যমান। বিশেষজ্ঞরা এর বহুবিদ কারনও উপস্থাপন করেছেন। যা এই ছোট পরিসরে তুলে ধরতে পারছি না। আমার ধারণা বাংলাদেশে যেহারে জনসংখ্যা বাড়ছে সে অনুপাতে কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না। আমাদের দেশে বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থারও যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। চাহিদার চেয়ে বেশি মানুষ কর্মক্ষম হয়ে উঠেছে।
আমাদের শিক্ষিত যুব শ্রেণি কিছুতেই চাকরি ব্যতীত অন্য কোন পেশা বা বৃত্তিকে গ্রহণের মানসিকতা পোষণ করে না। ফলে বেকারত্ব দিন দিন বাড়ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পারলে এবং শিল্পায়ন্ বৃদ্ধি পেলে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে দেশ রক্ষা পেতে পারে। (গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বেকারত্বের অভিশাপ সহ্য করতে না পেরে স্ত্রীর শাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে এক সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী আত্মাহুতি দিয়েছেন। স্বল্প শিক্ষিত হওয়ায় কোন কর্মসংস্থান করতে পারেননি দিপক ,যুগান্তর ৩১ জুলাই ২০১৫)। আরও নাম না জানা হাজারো দিপক সমাজে এই ভাবে জীবন আত্মাহুতি দিয়ে চলেছেন সে পরিসংখান কি কারো জানা আছে? দিপক জানিয়ে দিয়ে গেলেন বার বার চেষ্টা করেও চাকরি না পেয়ে যখন যে বেকার থাকে তার মধ্যে মানসিক যন্ত্রণা বা মনোবেদনা তৈরি হয়। এখান থেকে ঘটে ব্যক্তি জীবনের ছন্দ পতন। যার প্রভাব এক সময় পরিবার তথা রাষ্ট্রের উপর পড়ে।
আমরা বেকারত্তের অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই। বেকারত্ব বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নতির পথে সব চেয়ে বড় বাধা। এ বাধা দূর করে দেশকে বেকারত্ব মুক্ত করতে সরকারি বেসরকারি সংস্থা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, জন প্রতিনিধি ও বিত্তশালীদের ব্যাপকভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমরা হতাশ বেকার চাই না । চাই এমন স্বাধীন বাংলাদেশ যেখানে থাকবে না হতাশা, বেকারত্বের গ্লানি । সুখ শান্তিতে, হাসি আনন্দে ভরে উঠবে স্বপ্নের সোনার বাংলা এমনটাই প্রত্যাশা।
লেখা পাঠান ই-মেইলেঃ chilekothasahitto@gmail.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন