চিলেকোঠা ওয়েবজিনে প্রকাশিত সাহিত্যকর্ম ও অন্যান্য

সাহিত্য এবং কর্তৃত্ববাদ


সাহিত্য এবং কর্তৃত্ববাদ
মূলঃ জর্জ অরওয়েল 
তর্জমাঃ শাহারিয়ার জিম

আমার প্রথম আলাপের শুরুতেই আমি বলেছিলাম এটা কোনো উপযুক্ত সময় নয়যে সময়ে আমরা বসবাস করছি এটা পক্ষাবলম্বনের সময়, নিরপেক্ষতার নয়, এমন এক যুগ, বিশেষভাবে কোনো বইয়ের মতামতের সাথে আপনি দ্বিমত পোষণ করতে পারবেন না। রাজনীতি- একেবারে সাধারণ সেন্সে আমরা যে রাজনীতিকে জানি, সেটি এখন সাহিত্যের দখল নিয়েছে, এমন এক পর্যায়ের দখল যেটা স্বাভাবিক নয়, স্বাভাবিকভাবে হওয়ার কথাও নয় এবং এই দখলদারিত্ব আমাদেরকে এমন এক সংঘাতের মাঝে ঠেলে দিয়েছে যেটা যুগের পর যুগ চলে আসছে ব্যক্তি এবং তার সম্প্রদায়ের ভেতরে। যে মুহূর্তে একজন ব্যক্তি নিরপেক্ষ সমালোচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে যেকোনো বিষয়ের সমালোচনা করতে শুরু করেন, ঠিক সেই মুহূর্ত থেকেই সে এই ধরনের সংঘাত এবং হুমকির অস্তিত্ব অনুভব করতে থাকেন, যা কিনা ভবিষ্যতে আরও প্রকট রূপ ধারণ করতে যাচ্ছে।

আমরা এমন এক যুগে আছি, যেখানে স্বাধীন ব্যক্তির অস্তিত্ব বিপদাপন্ন, অথবা বলা চলে, যেখানে একজন ব্যক্তি স্বাধীন হবার কল্পনাও করতে পারেনা। এখন, আমরা সাহিত্য বলতে যা বুঝি কিংবা সর্বোপরি সমালোচনা বলতে যেরকমটা আমরা ধরি, তাতে এটাকে আমরা আমাদের পূর্ব স্বীকার্য হিসেবেই ধরে নিই যে, উক্ত সাহিত্যিক বা সমালোচক একজন স্বভাবতভাবেই স্বাধীন ব্যক্তি। আধুনিক ইউরোপের সমগ্র সাহিত্যকর্ম (আমি গত চারশো বছরের সাহিত্যকর্মের কথা বলছি), পুরোটাই এইরকম এক ইন্টেলেকচুয়াল সততার উপরে দাঁড় করানো অথবা শেক্সপিয়ারের এই ম্যাক্সিমের মত করেও বলতে পারেনঃ নিজের সাথে সৎ থাকো”একজন লেখকের কাছ থেকে প্রথমেই আমরা যেটা দাবী করি বা আশা করি তা হচ্ছে তার লেখনীর সততা, একজন লেখকের সেভাবেই লেখা উচিত যেভাবে সে চিন্তা করে, যেভাবে সে অনুভব করে, যা সে চিন্তা করে, যা সে অনুভব করে। একটা শিল্পকে সব থেকে জঘন্য বুঝাতে আমরা শুধু একটা শব্দ দ্বারা বুঝিয়ে দিতে পারি সেটা, তা হচ্ছে, শিল্পকর্মটি কৃত্রিম বা কপট। এবং এটা সৃজনশীল সাহিত্যকর্মের থেকেও বেশি যায় সমালোচনার ক্ষেত্রে, যেটাতে একটা নিদির্ষ্ট পরিমাণে সাহিত্য দোষ কিংবা নিদির্ষ্ট পরিমাণের একটা ছলচাতুরি থাকার পরেও তেমন একটা সমস্যা করেনা, যদি সমালোচনাটি আদতে অকপট কিংবা অকৃত্রিম হয়। আধুনিক সাহিত্য মূলত ব্যক্তিগত। হয় এটা এক ধরনের সৎ অভিব্যক্তি নতুবা এটা কিছুই না।

যেমনটা আমি বললাম, এই ধারণাটি যদি আমরা মেনেও নিই, তারপরেও যে মুহূর্তে আমরা এই ধারণাগুলিকে শব্দের রূপ প্রদান করতে যাবো সেই মুহূর্তেই আমরা অনুভব করতে পারবো সাহিত্যের উপর দখলদারিত্বের হুমকি। কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রের যুগে একজন স্বাধীন ব্যক্তির আবির্ভাব হয়তো কখনোই সম্ভব নয়। তবে কর্তৃত্ববাদ সম্পর্কে আমাদের ভুল ধারণা এই যে, যখনি কেউ কর্তৃত্ববাদ শব্দটি উল্লেখ করে তখনি আমরা ধরে নেই জার্মানি, রাশিয়া, ইতালি এইসব দেশের নাম, কিন্তু আমি মনে করি একজন ব্যক্তির এই হুমকি অবশ্যই উপলব্ধি করা উচিত যে, কর্তৃত্ববাদ এখন আর গুটিকয়েক দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেনা, এটি পৃথিবীব্যাপী একটি ধারণায় রূপান্তর পেতে যাচ্ছে। যেভাবে করে একটির পর একটি দেশ কেন্দ্রীভূত অর্থনীতি পলিসির দিকে ঝুঁকছে যাকে আমরা সমাজতন্ত্র বা রাষ্ট্রীয় পুঁজিবাদ যেই নামেই ডাকিনা কেন, তাতে করে মুক্ত পুঁজিবাদের যুগ আবশ্যকভাবেই শেষ হতে চলেছে। ব্যক্তির এই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা লোপের সাথে-সাথে তার ইচ্ছা মত যেকোনো কাজ করার, যেকোনো ভাবে জীবিকা নির্বাহের, নিজের কাজ নিজের বেছে নেবার এবং স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করার অধিকারও লোপ পেতে চলেছে। এখন পর্যন্তও এই বিষয়টি কেউ লক্ষ করেনি। এটা কখনোই ধারণা করা হয়নি যে, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ইন্টেলেকচুয়াল স্বাধীনতার উপরে কোনো প্রভাব ফেলতে পারে। সমাজতন্ত্রকে মূলত ভাবা হত নৈতিক উদারনীতি। রাষ্ট্র আপনার অর্থনৈতিক জীবনের দায়িত্ব নিবে এবং আপনাকে দারিদ্র্য ও বেকারত্বের হুমকি থেকে মুক্তি দিবে, কিন্তু আপনার ব্যক্তিগত ইন্টেলেকচুয়াল জীবনে নাক গলাবে না। শিল্প ঠিক ততটাই উন্নতি লাভ করবে অথবা তার থেকেও বেশি যেমনটা করতো উদার পুঁজিবাদী যুগে, কারণ শিল্পীর উপর থেকে তখন অর্থনৈতিক চাপটি উঠে যাবে।

এখন, প্রাপ্ত প্রমাণ সমূহের উপরে ভিত্তি করে, একজনের এটা অবশ্যই বলা উচিত যে, উক্ত ধারণা গুলি ইতোমধ্যেই ভুল প্রমাণিত হয়েছে। কর্তৃত্ববাদ এমনভাবে চিন্তার স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করেছে যে, এরূপ পূর্বোক্ত কোনো যুগেই আর দেখা যায়নি। এবং এটা উপলব্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ যে এই চিন্তার নিয়ন্ত্রণ শুধু প্রচ্ছন্নভাবেই হচ্ছেনা, একেবারে দিনের আলোর মত স্পষ্টভাবেই করা হচ্ছে এই কাজ। কর্তৃত্ববাদ শুধু আপনাকে প্রকাশ করা থেকেই বিরত রাখেনা, এমনকি এটা আপনার বিশেষভাবে চিন্তা করা থেকেও বিরত রাখে, এবং আপনি কী চিন্তা করবেন সেটাও নির্দিষ্ট করে দেয়, এটি আপনার জন্য একটি চিন্তার ফ্রেম তৈরী করে সেখানেই আবদ্ধ রাখে, এটি কিছু নির্দিষ্ট আচরণ প্রণালি তৈরী করে দিয়ে আপনার ইমোশনাল লাইফকে নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টায় রত হয়। এবং যতদূর সম্ভব কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র চায় তার নাগরিকদের বাইরের দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে যার ফলে তারা কোনো মানদন্ডের সাথে তুলনায়ও যেতে পারেনা। যেকোনো মূল্যেই হোক, কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র তার নাগরিকদের চিন্তা এবং আবেগকে তো নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেই এমনকি এটি নাগরিকদের আচরণকেও নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে।

কর্তৃত্ববাদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যদিও সে চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করে, কিন্তু চিন্তাকে একেবারে স্থায়ী করে দেয়না তবে প্রশ্নাতীত মতবাদসমূহ প্রতিষ্ঠা করে এবং দিনের পর দিন সময় ও সুযোগ মত সেগুলোকে পরিবর্তন ও রূপান্তর করে। ক্ষমতা কেন্দ্রিক রাজনীতির স্বার্থেই এর দরকার কিছু পক্ষপাতী মতবাদ যেগুলোর মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র তার নাগরিকদের চূড়ান্ত বশ্যতা আদায় করে। এটি নিজেকে অব্যর্থ এবং অভ্রান্ত হিসেবে ঘোষনা করে, পাশাপাশি বস্তুনিষ্ঠ সত্যের অস্তিত্বের ধারণাকেও আক্রমণ করে। 

যে প্রশ্নটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে, এমন পরিবেশে কি সাহিত্য বেঁচে থাকতে পারে? আমার মনে হয়, এর উত্তর একেবারে সংক্ষেপে বলা চলে, না। কর্তৃত্ববাদ যদি বৈশ্বিক ধারণায় রূপান্তর পায় এবং স্থায়ী হয়, তাহলে আজ আমরা সাহিত্য বলতে যা জানি তার মৃত্যু ঘটবে। এবং শুধু এখানেই শেষ নয়, এর সাথে সাথে কেবলমাত্র রেনেসাঁ পরবর্তী ইউরোপিয়ান যে সাহিত্য সেসবেরও একই সাথে মৃত্যু ঘটবে।

ইউরোপ কিংবা প্রাচ্য যেখানেই হোক, কর্তৃত্ববাদ এবং পূর্বের সকল অর্থোডক্সি, এই দু’য়ের মধ্যে কিছু গভীর তফাৎ আছে। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্যটি হলো, অতীতের অর্থোডক্সি চিন্তাধারা পাল্টায়নি, অথবা বলা চলে, রাতারাতি পাল্টায়না। মধ্যযুগীয় ইউরোপে চার্চ ব্যক্তির বিশ্বাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছে কিন্তু অন্ততপক্ষে এটা ব্যক্তিকে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একই বিশ্বাসে থাকতে বাধা দিতোনা। চার্চ সোমবারে একটা আর মঙ্গলবারে আরেকটা বিশ্বাস করতে বলতোনা। এবং একই জিনিস কম বেশি সকল অর্থোডক্সি চিন্তাধারার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য সেটা হোক, খ্রিস্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ কিংবা মুসলিম। এক কথায় বলা যায়, তাদের চিন্তাধারা সীমাবদ্ধ ছিলো একটা ফ্রেমে, কিন্তু ব্যক্তি তার সারাজীবন একটা বিশ্বাস নিয়েই কাটাতে পারতো এবং তার আবেগের জায়াগাতে কেউ অনধিকার হস্তক্ষেপ করতেও চাইতোনা।

এখন, কর্তৃত্ববাদের ক্ষেত্রে ঠিক উল্টোটা সত্যি। কর্তৃত্ববাদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যদিও সে চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করে, কিন্তু চিন্তাকে একেবারে স্থায়ী করে দেয়না তবে প্রশ্নাতীত মতবাদসমূহ প্রতিষ্ঠা করে এবং দিনের পর দিন সময় ও সুযোগ মত সেগুলোকে পরিবর্তন ও রূপান্তর করে। ক্ষমতা কেন্দ্রিক রাজনীতির স্বার্থেই এর দরকার কিছু পক্ষপাতী মতবাদ যেগুলোর মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র তার নাগরিকদের চূড়ান্ত বশ্যতা আদায় করে। এটি নিজেকে অব্যর্থ এবং অভ্রান্ত হিসেবে ঘোষনা করে, পাশাপাশি বস্তুনিষ্ঠ সত্যের অস্তিত্বের ধারণাকেও আক্রমণ করে। একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি আরও পরিষ্কার করা যায়, ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রত্যেক জার্মান নাগরিকই রাশিয়ান বলশেভিকবাদকে বিরক্তি ও ভীতির চোখে দেখতো, কিন্তু ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তাদেরকে সেই একই রাশিয়ান বলশেভিকবাদকে দেখতে হয়েছিলো শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার চোখে। যদি রাশিয়া এবং জার্মানি পরবর্তীতে যুদ্ধে যেত আবার, যেটা হয়তো যাবেও আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই, তখন আবার রাতারাতি এর নাগরিকদেরকেও ঠিক উল্টোভাবে নির্দেশ করা হতো, জার্মানদের ইমোশনাল লাইফ, তাদের ভালোবাসা, তাদের ঘৃণা, এসব রাতারাতি পাল্টে ফেলার দাবী করা হতো রাষ্ট্রপক্ষ থেকেএখন এই পরিস্থিতি সাহিত্যের উপরে কতটা বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে তা আমার বলে না দিলেও চলবে। যেমনটা আমরা জানি যে, লেখালেখির বিরাট অংশ জুড়ে আছে অনুভবের বিষয়, অনুভূতির বিষয়, যেটা রাতারাতি পরিবর্তন করা যায় না এবং সবসময় বাইরে থেকে জোরাজুরি করেও পরিবর্তন করা সম্ভব নয়প্রচলিত মতকে শুধু মুখে কথায় শ্রদ্ধা দেখিয়ে কাজ চালানো গেলেও, লেখালেখি চালানো যায় না। লেখকের লেখালেখির জন্য তার নিজের প্রতি সৎ থাকা দরকার এবং যেসব সে সত্য জেনে অনুভব করে শুধুমাত্র সেসব লেখার ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত প্রেরণা পাবে, তাছাড়া একটি স্বার্থক লেখার জন্য যথেষ্ট সৃজনশীল প্রেরণা পাওয়া সম্ভব নয়। এসব প্রমাণ সমূহের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি, কর্তৃত্ববাদ আবেগের যে রাতারাতি এবং হঠাৎ পরিবর্তন দাবী করে তার নাগরিকদের কাছ থেকে সেটি মনস্তাত্ত্বিকভাবে অসম্ভব। এবং এটাই প্রধান কারণ যে কারণে আমি মনে করি যদি কর্তৃত্ববাদ পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে তবে আজকে আমরা সাহিত্য বলে যা জানি, সেটির সমাপ্তি অনিবার্য। এবং, কর্তৃত্ববাদ আদতে এরকম বিরূপ প্রভাব সাহিত্যের উপরে আসলেই ফেলতে পারেইতালির সাহিত্য এখন বিকলাঙ্গ, এবং জার্মানির বেলায় এটি প্রায় মৃত। নাৎসিরা বই পোড়ানোর স্বভাবের জন্য কুখ্যাত। এমনকি রাশিয়াতে যে সাহিত্য রেনেঁসা আশা করা হয়েছিলো একদা সেটাও হয়নি, এবং রাশিয়ার সব থেকে সম্ভাবনাময় লেখকদেরও দেখা গেছে হয় আত্মহত্যা করতে কিংবা জেলখানায় হারিয়ে যেতে।

আমি প্রথমেই উল্লেখ করেছি, উদার পুঁজিবাদ আবশ্যকভাবেই সমাপ্তির পথে, সুতরাং এমনটা মনে হতে পারে যে আমি হয়তো বলছি যে চিন্তার স্বাধীনতাও অবধারিতরূপেই শেষ। কিন্তু আমি এমনটা মনে করিনা, এবং উপসংহারে আমি সহজভাবেই এটাও বলতে চাই যে, আমি বিশ্বাস করি যে সাহিত্যের বেঁচে থাকার আশা আমরা ওইসব দেশেই করতে পারি যেসব দেশে উদারনীতি তার শেকড় গেঁড়ে বসেছে, পশ্চিম ইউরোপ, আমেরিকা, ভারত এবং চীন এসব দেশ।  হতে পারে আমার এই ধারণাটি সাহিত্য প্রীতির কারণে এর প্রতি একটা ইতিবাচক প্রত্যাশা, কিন্তু যেহেতু কেন্দ্রীভূত অর্থনীতির উত্থান বাধ্যতামূলক, তা সত্ত্বেও আমার মনে হয় উল্লেখিত রাষ্ট্রসমূহ সমাজতন্ত্র কিংবা রাষ্ট্রীয় পুঁজিবাদে রূপান্তরিত হলেও, একটি সময় এমন কোনো পর্যায়ে বিবর্তিত হতে পারে, যে পর্যায়ে এরা কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র আর থাকবেনা, যে পর্যায়ে চিন্তার স্বাধীনতা বেঁচে থাকবে অর্থনৈতিক ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যবাদ লোপ পাওয়ার পরেও। সাহিত্যের ব্যাপারে কেয়ার করে এমন লোকদের জন্য হয়তো এটাই একমাত্র আশা। সাহিত্যের মূল্য অনুভব করতে পারে, সাহিত্য মানুষের উন্নতির ইতিহাসে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে, এসব যে ব্যক্তি অনুভব করে, তার অবশ্যই উচিত কর্তৃত্ববাদকে প্রতিরোধের চেষ্টা করা, সেটা আমাদের উপরে চাপিয়ে দিয়ে হোক কিংবা আভ্যন্তরীণ কূট-কৌশলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত কর্তৃত্ববাদই হোক, সাহিত্যের গুরুত্ব অনুভব করা প্রতিটি ব্যক্তির দায়িত্ব কর্তৃত্ববাদকে প্রতিরোধের সর্বাত্মক চেষ্টা করা। (১৯৪১)

(লেখাটি নেওয়া হয়েছে এই ওয়েবসাইট http://orwell.ru/library/articles/totalitarianism/english/e_lat) থেকে বই আকারে রচনাটি পাওয়া যাবেঃ The Collected Essays, Journalism and Letters of George Orwell (1968) তে।)

লেখা পাঠানঃ chilekothasahitto@gmail.com

মন্তব্যসমূহ

দেশসেরা বুকশপ থেকে কিনুন চিলেকোঠার বই

চিলেকোঠা বেস্ট সেলার বইসমূহ

‘নক্ষত্রের খোঁজে’ প্রতিযোগিতা ২০২২ এর নির্বাচিত বই