চিলেকোঠা ওয়েবজিনে প্রকাশিত সাহিত্যকর্ম ও অন্যান্য

রিয়াজ মাহমুদের ৩টি কবিতা


রিয়াজ মাহমুদের টি কবিতা

মুসাফির

ভুরভুরে বকুল মাড়িয়ে ছুটে রানারের বুট
সুকান্ত; দ্যাখো ভাই!
রাত্রির মধ্যস্থতাকারী চাঁদের বৈরি উপত্যকায়
বকুল বকুল গন্ধ
ঘাসফড়িঙ গুনে যাচ্ছে ষোল ঘরের নামতা,
সুপারি গাছের তলে পূর্ণদৈর্ঘ্য দুধের পেয়ালা
আমি ঝাঁঝরা হয়ে যাই, খোঁচাখোঁচা আঘাতে
বাতাস ছেনে বল্লম
ঢুকে যাচ্ছে অনিন্দ্য স্বপ্নময় চোখের কোটরে
সুকান্ত; ভাই, এই চোখের উত্তলে তোমার কবর,
ডালিমতলে রচিত বিষণ্ণ পাখির ডানায় ছড়েছে রোদ্দুর,
পালক ছুঁড়ে গেছ বিগত জীবনের দূর্বায়
একটা ঝড়ো আকাশের মিনতি করে,
বৃষ্টির পিপাসা দুচোখ ছাপায় রেখে গেছ সিন্দুক
দ্যুলোক আর পাহাড়ের হুতাশায়
মাছির টেলিপ্যাথি বলছে ক্রান্তির এমনই সংবাদ,
ধোপদস্ত হত যদি বারোয়ারি শরীর
পারস্যে যেতাম, কল্লোলিনী,
মজলিশে মজলিশে করে বেড়াতাম সরফরাজি
সুকান্তবৃত্তি


ব্যুৎপন্ন

নিঃসঙ্গতার ঘনত্ব মাপি গ্লান্ডের স্বরলিপিতে
অধঃমুখ পাত্রে রাখা ঘুটঘুটে অন্ধকার
পান করে নেই সুধা ভেবে
আমি হাঁটি, একটা ভালো থাকার চক্রান্ত দিয়ে,
খারিজ করবার দায়বদ্ধতা থেকে,
বারবার নিজেকে ঝুলাই নোটিশ বোর্ডে;
কখনোবা অংশ হই পাপেট নাচে
মাতৃমুগ্ধ ছাগবৎস,
আমাকে কয় বারান্দার দুখ্, ঘাসের অসুখ
ম্যারাথন সাঁতারে, ভোল্টে চলে নৃত্য...
মাতৃবিয়োগের শোক
এক পাহাড়িমালির কফিবাড়িতে,
সিনথেটিক ধ্বসের মত,
খেলে যাচ্ছে অনুদ্ঘাত হাইড-এন্ড-সিকের রহস্য
ইজিপ্ট সভ্যতার বুক চিরে, হরিদ্বর্ণ মৎস্য
তারাডোবা নদীর স্রোতোবহা কূলে
ডাকে মর্মর বান
এক চক্ষুবিশিষ্ট এক মানুষ
প্রথম দেখে ফেলে সেই মিথ,
মুঠো করে লেপে নেয় মেঝেতে,
নৃত্য, নোটিশ ইতিহাসকে


দূরপাল্লার দিনগুলো

জোড়ালো ঝড়ের তোড়ে আটকা পড়ে যাই মায়ের চিন্তিত কপাল ফুঁড়ে, ফুটে ওঠে ভাঁজফুল মাঝসমুদ্র থেকে অনাঞ্চলিক বায়ু স্বর্গের দ্বার ইজারা নিয়ে রাখে গন্ধম খাইনি তবু স্বর্ণকারের উত্তেজিত মেশিনারিজে আমার অাত্মা নাকি বিশুদ্ধ করতে হবে! ঢেউয়ানো জলের উপর সাঁতারু চাঁদের মত চঞ্চল সে বিপন্নতায় ঢুলে, নিজেকে এগিয়ে নিই স্টেশন রোড, পারাবত ট্রেডার্স, ঢাকাগামী ট্রেনের শিডিউল মিস রে নিকটস্থ সেলুনের আয়নায় তাকাই রেলের ক্রসিং পেরিয়ে তিশা কাউন্টার ধরি
দীর্ঘবহেলিত কোঠার ভাড়াটে-একাকীত্বতা আমাকে রুখে দেয় বাসে ঘণ্টায় নব্বুই মাইল ছোটা এই দৌড়বাজ যানের চাকায় যেন নগরীর একান্ত নিরালা নেমে আসে এবং গুলিস্তান হতে দশটাকা ভাড়ার দূরত্বে নামিয়ে দিয়ে যে কন্টাক্টর নিরুদ্দেশ প্রেমিকার মতই কেয়ারলেস হয়ে পড়ে, দোয়েলচত্বরের জ্যামে বসে, সেই অসঙ্গতি ভেবে আমি ভুলে যাই আমাদের রিকশাভ্রমণের রুটগুলো রামপুরা, সিদ্ধেশ্বরী, ভিকারুন্নিসা আমরা কোনকোন রাস্তা য়ে কি কি গলিতে ঢুকেছি কিছুই মনে করতে পারি না মনের মধ্যে, যেন সাপের জ্যান্ত বিষদাঁত পড়ে আছে কারু!


লেখা পাঠানঃ chilekothasahitto@gmail.com

-বিজ্ঞাপন-



মন্তব্যসমূহ

দেশসেরা বুকশপ থেকে কিনুন চিলেকোঠার বই

চিলেকোঠা বেস্ট সেলার বইসমূহ

‘নক্ষত্রের খোঁজে’ প্রতিযোগিতা ২০২২ এর নির্বাচিত বই