চিলেকোঠা ওয়েবজিনে প্রকাশিত সাহিত্যকর্ম ও অন্যান্য

বিজ্ঞাপন: 'No smoking, Not even an Abdullah', মগজে বিষ ঢালা এবং বিবিধ আলাপ



বিজ্ঞাপন: 'No smoking, Not even an Abdullah',  মগজে বিষ ঢালা এবং বিবিধ আলাপ
মিলু হাসান


বিজ্ঞাপন বর্তমান পুঁজিবাদী জমানার পণ্য বিক্রির গণ্ডিতে আঁটকিয়ে থাকে নি। এটা যে কত ব্যাপক-বিস্তৃত মাকড়সার জালে মানুষরে বন্দি করে মুলা ঝুলিয়ে ফায়দা লুটে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে তার হিসাব করতে সুপার কম্পিউটার লাগবে বোধ হয়। হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও লেখক ইভাল নোয়ান হারিরি তাঁর কিতাবে বলতাছেন যে কীভাবে প্রযুক্তি, মিডিয়া দুনিয়া আপনার চিন্তাকে কন্ট্রোল করতাছে, আপনি নিজে নয়া কইরা যা ভাবতে চাইতাছেন তা পারছেন না বরং আপনার চিন্তার ভিতর সে কীভাবে প্রভাবক হিসাবে জাহির থাকতেছে। এসব বুঝতে হারিরির কিতাব না পড়লেও চলে জাস্ট একটু আশেপাশে চোখ খুলিয়া দেখলেই ধরা পড়ে ফাঁদ। মিডিয়াগুলার একটা বড় আয়ের মাধ্যম পণ্যের বিজ্ঞাপন, পণ্য মানে পণ্য না আজকাল দলের পক্ষে সাফাই, প্রার্থীর ভোট চাওয়া, মতবাদ প্রতিষ্ঠা বা সমর্থন তৈয়ারের বিজ্ঞাপনসহ ইত্যাকার  কত হরেক কিছিমের জিনিশ যে আজকাল পণ্যের বিজ্ঞাপনের আওতাভুক্ত তা বলা  মুশকিল। এমনকি একটি ক্রিটিক, বিষোদগার, পত্রিকার নিউজ ও হলুদ সাংবাদিকতা,ফেসবুক স্টেস্টাসও বিজ্ঞাপনের বাহিরে নয়। 

পুঁজিবাদী জমনায় সমস্ত কিছুই পণ্য। মজার ব্যাপার যে মানব সমাজরে বিক্রেতারে ক্রেতা ভাবে একদা এক সময়ে খেয়াল করলে ধরা পড়ে ক্রেতাই মানে মানুষই পুঁজিবাদী সমাজে সবচে কম দামি বা সস্তা পণ্যে পরিগণিত হয়। কী করুণ! 

'বিজ্ঞাপন ' শব্দটি নিজেই যেন আজকাল হাইপারবুলি বা অতিরঞ্জিত। সং সাম্রাজ্য যা ৯৬০-১২৭৯ খ্রিস্টাব্দ সময়কাল পর্যন্ত টিকে ছিলো, সে সময়কালে চীনের জিনানে ব্রোঞ্জের ফলকে ক্যালিগ্রাফি করে 'Liu family Neddle Shop' বিজ্ঞাপন প্রথম বাহির হয়েছিল। সে বিজ্ঞাপনে লেখা ছিলো : 'আমরা ভালো রড ক্রয় করি, সেখান থেকে মান সম্পন্ন সুঁই তৈরি করি, যা আপনারা বাড়িতে যে কোনো সময় ব্যবহার করতে পারেন। 'এখানে পণ্যের প্রশংসা করলেও তা ছিলো সাদামাটা। তারপর ইংল্যান্ডে টাউন কেরিয়ার বা হকার কিছিমের লোক দিয়ে যারা পরিধান করতো কোট, হ্যাট, স্যুট আর হাতে কাগজে লেখা বিজ্ঞাপন তা মাইক দিয়ে শহর জুড়ে উচ্চ আওয়াজে বলতো। মূলত ঊনবিংশ শতাব্দিতে শিল্প বিপ্লবের পর থেকে বিজ্ঞাপনের পুরাদমে চাহিদা বাড়া শুরু করে,উইকলি নিউজপেপারে বিজ্ঞাপন ছাপা হতে শুরু করে পুরোদস্তুর । অতঃপর বিংশ শতাব্দীতে তা ব্যাপক ভাবে শুরু হয়। যখন পৃথিবী জুড়ে শিল্প-কারখানা ক্রমশ বেড়েই চলছে, বাড়ছে পণ্য, বাড়ছে ক্রেতা, হচ্ছে ধনীর লিস্ট তৈয়ারের জন্য ফোর্বস ম্যাগাজিন। বিলেতবাসী থমাস জেমস ব্রেরটকে আধুনিক বিজ্ঞাপনের জনক বলা হয়। এ লোক ১৯১২ সালে 'Pears Soap Company 'র একটি বিজ্ঞাপন লিখে ইমেজ বসায় সেখানে বিজ্ঞাপনের স্লোগান ছিলো, ""Good morning. Have you used Pears' soap?" তখনো ও বিজ্ঞাপন ছিলো কী কিউট। 'ফলস এডভারটাইজমেন্ট ' জিনিশটা কি লোকেরা তা বুঝলেও তার প্রয়োগ ঘটায় নি। এখন বিজ্ঞাপন হচ্ছে হাওয়াই মিঠাই। দূর থেকে বেশ বড়সড়ো চমকপ্রদ ও চকচকে প্রোডাক্ট কাছে গেলে মানে হাওয়াই মিঠাই মুখে পুরে ফেললে যেরকম হাওয়া সেরকম, অনেকটা অর্ধেক ফাঁপা চিপসের প্যাকেট, যা খুললে পরে বোঝা যায় অর্ধেক বাতাস। 

এখনকার জমানায় সমস্ত মানুষই প্রযুক্তি, মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়ার মাকড়সার জালের ভিতর বন্দি। তাই এসবই হয়ে উঠেছে বিজ্ঞাপনের কর্ণধার।ওয়াল স্ট্রীট জার্নাল  ২০১৭ সালের জরিপে দেখা গেছে ৪০.৪ পারসেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয় টেলিভিশনে, ৩৩.৩ ভাগ টেলিভিশন ব্যতীত অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে, ৯ পারসেন্ট নিউজপেপারে, ৬.৯ পারসেন্ট ম্যাগাজিনে, ৫.৮ পারসেন্ট আউটডোরে আর ৪.৩ পারসেন্ট রেডিওতে। এ সমস্ত জিনিশের সাথে মানুষ যুক্ত থাকায় প্রতিনিয়ত মানুষের মগজে সে নিয়ন্ত্রণের একটা পায়তারা করে যাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন ও এর বাহিরে নয়। ২০১৫ সালের এক হিসাবে দেখা যায় এসব বিজ্ঞাপন থেকে তাদের আয় ৫২৯.৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।এতই বেহায়া হয়ে গেছে কোম্পানিগুলা ইউটিউবে ভিডিওর মাঝখানে এ্যাড, প্লে স্টোরে এ্যাপস ডাউনলোড করতে গিয়ে এ্যাড........ মানে জোর করে কৌশলে এ্যাড দেখতে বাধ্য করা। 

'No smoking, Not even an Abdullah. '- আবদুল্লাহ সিগারেটের বিজ্ঞাপন এক প্রকার তরজমা করে নিলে দাঁড়ায় 'ধুমপান নিষেধ, তা যদি আবদুল্লাহও হয়। ' এর চে আশ্চর্য বিজ্ঞাপনের স্লোগান আমি কম দেখেছি লাইফে। এ বিজ্ঞাপনটি ষাটের দশক থেকে বাংলাদেশে চালু ছিল এবং আবদুল্লাহ ব্রান্ডের সিগারেট গত শতাব্দীর অন্যতম দামি ও সুনাম অর্জন করা সিগারেট কোম্পানি। নব্বইয়ের দশকে নাকি ১ শলাকা আবদুল্লাহ সিগারেটের দাম ছিলো ৩০০-৪০০ টাকা, তা জানিয়েছে এক সিগারেটখোর। যে যৌবনে এ সিগারেট একবার পান করার সুযোগ পেয়েছিল। 

পণ্যের বিজ্ঞাপন তৈরির ক্ষেত্রে ভোক্তার চাহিদার মূল জায়গাটাকে নির্ণয় করে তার উপর খুব মাপজোপ করে চমদপ্রদ বিজ্ঞাপন তৈরি করা হয় অহরহ। ভোক্তার চাহিদার মূল জায়গা বলতে এখানে তার মনমানসিকতা, চিন্তা, পছন্দও বাদ পড়ে না। এক্ষেত্রে অধিকাংশ পাবলিকের মনমানসিকতা -চিন্তা-পছন্দকে পুঁজি করে তা বানাতে কোনো তোয়াক্কাই করে না পণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান এমনকি তা যদি বর্ণবাদীও হয়। এক্ষেত্রে তাদের পণ্যের গুণগান গাহিতে তারা ভাড়া করে পিন-আপ মডেল মানে যারা খুব বড় সেলিব্রেটি এ সময়কার। পিন-আপ মডেলরা এরকম ও করে থাকেন যে সমাজে 'জিরো ফিগার 'মানেই সৌন্দর্য এরকম ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে প্রসাধন সামগ্রী, জিমনেশিয়ামসহ বিবিধ জিনিশের এ্যাড দিয়ে থাকেন। তারা আরো প্রতিষ্ঠা করেন 'ফর্সা মানেই সুন্দর ' 'কালো মানে অসুন্দর '। তবে সব জায়গায় করেন না। জায়গা বুঝে করেন।

চাইনিজ রেসিস্ট এ্যাডের নিচে একজনের কমেন্ট পড়ে আমার মনটা খারাপ হয়ে গেলো -"My friend told me years ago that when she first saw this ad. on tv when she was younger she sat in the bath for hours trying to wash her dark skin away."

'ফেয়ার এন্ড লাভলী' খ্যাত ভারতীয় উপমহাদেশ। ইউনিলিভারের বড় বাজার। এ উপমহাদেশের মানুষের গাত্রবর্ণ সাধারণত শ্যামলা ও কালো। সুতরাং তাদেরকে প্রসাধনী ব্যবহার করে সাদা বানানির ধারণা প্রতিষ্ঠা করে দেখাতে হবে সাদা মানে ফর্সা হলে দুনিয়ার চাকরি, বাকরি, জাগতিক, সমস্ত সাফল্য তার দুয়ারে কিভাবে মাথা নত করে। এ প্রোপাগান্ডা প্রতিষ্ঠা করলে ইউনিলিভারসহ বিবিধ কোম্পানি বিশাল একটা বাজার তৈয়ার হবে। সাত দিন ফেয়ার এ্যান্ড লাভলী ব্যবহার করে ফর্সা হয়ে একটি মেয়ে চাকরি, বিয়াসহ জাগতিক সব সাফল্য তার উপর ভর করছে। what a joke! কোম্পানিগুলা এ-ও জানে এসব বিশ্বাস করা বোকার স্বর্গ খুব কমই আছে এ উপমহাদেশ ছাড়া।  ফেয়ার এন্ড লাভলীর এ্যাড দিতে গিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠা করছে বর্ণবাদ বা রেসিজম। জিরো ফিগার মানে সুন্দরী এ ধারণাও প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে মামুরা ফিউচারে তাদের পণ্যের বিক্রি বাড়ানির লাগি। কারণ তারা জানে উপমহাদেশের নারীরা জিরো ফিগার না মানে তাদের মাপমতে তাদের ওজন বেশি সাধারণত বেশিরভাগ নারীর। আহা হরলিক্স। হরলিক্স খেয়ে বুদ্ধি বাড়তে বাড়তে শরীর শক্তিশালী হতে  হতে শিশুরা এক একজন চাইল্ড আইনস্টাইন হয়ে যাচ্ছে। যে হরলিক্স খাচ্ছে সে পাচ্ছে ১০০ তে ১১০ আর যে খায় না সে পাচ্ছে ১০০ তে ০ এরকম টাইপ এ্যাড ও নির্মাণ করছে। হয়তো প্রত্যন্ত গ্রামের এক শিশু, কিশোরের বাপ-মা অর্থাভাবে হরলিক্স কিনে না দিতে পেরে মনে মনে দীর্ঘশ্বাস ফেলছে। আহা! মাল্টিনেশনাল কোম্পানি তুমি ইস্ট ইন্ডিয়ার দাদা ওস্তাদ। ব্রিট্রেনে হরলিক্সের এ এ্যাড একবার দেখানির পর বন্ধ করে দিছে। 'ফলস এ্যাডভারটাইসমেন্ট' এর আওতায় পড়ে আমাদের মিডিয়াতে প্রচারিত অধিকাংশ এ্যাড। যা ভোক্তা সুরক্ষা আইন, বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র নীতিমালা আইন লঙ্ঘন করে। এরকম ধরে ধরে এ্যাডের কথা বলা অসম্ভব। এর জন্যি একখানা পুস্তক লিখিতে হবেবে তাহলে। 'ফলস এ্যাডভারটাইসমেন্ট' পড়ে ভুয়া স্বাস্থ্য উপকারী, পণ্যের বাজে দিক অপ্রকাশ, সজীব ফলের ছবি দেখিয়ে ভিতরে ফলের পরিবর্তে শুধু ফ্লেভার........  । আমাদের দেশের ভোক্তা সুরক্ষা আইন ও বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র নীতিমালার অনেক ফাঁক ফোকর রয়েছে, পাশাপাশি মোঘল সম্রাট কোম্পানি গুলার জন্য রয়েছে নামে মাত্র সাজা, অতপরও আইন প্রয়োগ রয়েছে ব্যাপক ফাঁকিঝুঁকি। অথচ আমেরিকায় কোকো কোলাকে ও আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হয়েছে 'ফলস এডভারটাইসমেন্ট' এর জন্য। উন্নত বিশ্বে এসব জন্য প্রশাসন দারুণ সচেতন ও কঠোর। সৌদি আরবে শুধু পণ্য যাচাই বাছাই এর জন্য এক ধরনের পুলিশই আছে। আমরা খাচ্ছি হাওয়া মিঠাই, ব্যবহার করছি বিষাক্ত কেমিকেল আবার যে হাওয়াই মিঠাই খাচ্ছি তার ভিতরে যতটুক না বিষ তার চে বেশি বিষ মানে রেসিজম, প্রোপাগান্ডাসহ বিবিধ ভুয়া কর্মাশিয়াল কনসেপ্ট আমাদের মাস্ পিপলের ব্রেনে সেট করে দেয়া হচ্ছে। নোট : আমি এ্যাডগুলি ধরে ধরে বললাম না আপনারা খেয়াল করলেই দেখবেন।

চাইনিজ এক এ্যাডে লনড্রি ডিটারজেন্টের এ্যাড দিতে গিয়ে দেখানো হলো একজন কালো  যুবকে উক্ত ডিটারজেন্ট দিয়ে ওয়াশিং মেশিনে রাখলে সে একেবারে ধবধবে ফরসা চাইনিজ যুবক হয়ে বের হচ্ছে। এরকম রেসিস্ট এ্যাড অহরহ আমাদের আশেপাশে। এজন্য আজও আমাদের দেশের অধিকাংশ পোলা পাত্রী দেখতে গিয়ে সুন্দরের জন্য এক ও একমাত্র বিচার করে মেয়েটি ফর্সা কী-না। ফেসবুকে কাপলরা ছবি দিলে কালো যুবকের সাথে ফর্সা যুবতীর বিবাহ হলে আমরা কমেন্ট করি ভাই জিতছেন। মানে এখানেও ডিপলি রেসিজম প্রতিষ্ঠা। যাই হোক উক্ত ইউটিউবে চাইনিজ রেসিস্ট এ্যাডের নিচে একজনের কমেন্ট পড়ে আমার মনটা খারাপ হয়ে গেলো -"My friend told me years ago that when she first saw this ad. on tv when she was younger she sat in the bath for hours trying to wash her dark skin away."

ভাইসাব সৌন্দর্যের যে সংজ্ঞা বিজ্ঞাপনে দেয় তা সব বোকাস বিকজ সৌন্দর্যের সংজ্ঞা নাই। কারণ প্রত্যেক মানুষের কাছে সৌন্দর্য মানে আলাদা কিছু হওয়াই যৌক্তিক। সবই সুন্দর, আপনার কাছে যা অসুন্দর, অন্যের কাছে তা সুন্দর। যেহেতু আমাদের উপমহাদেশের অধিকাংশ মানুষের নিজস্ব চিন্তাধারা নাই তাই বোকা বাক্স সে তার কর্মাশিয়াল থিংকিং তাদের উপর ঢেলে বস্তা বস্তা টাকা কামাছে আর ছড়াচ্ছে রেসিজম। ফিল্ম, নাটক ও রেসিজম ছড়ায় গোপনে গোপনে। জিরো ফিগার মানে সুন্দর, মিডিয়াম সাইজ, একটু মোটা মানে কুৎসিত। এসব রেসিজমের টোপ হচ্ছে নারী ও শিশুরা। পুরুষরা যে হচ্ছে না সেরকম না। ব্যবসা বাড়াতে ধর্মকে বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করতে ভুলছে না, বেরুচ্ছে হিজাব রিফ্রেশ নামে এ্যাড।

এসব প্রচারে তারা বেছে নিছে বড় বড় বিখ্যাত সেলিব্রেটিদের। বেছে নিক সমস্যা নাই কিন্ত যখন দেখি সেসবের সাথে রেসিজম জড়িত তখন তারকাদের উচিত এসব এ্যাড না করা, কনসেপ্ট পাল্টাতে বলা। টাকার সাগরে ডু্ব না মারা। শাহরুখ খান যখন 'ফেয়ার এন্ড হেন্ডসাম ' এর এ্যাড দিতে গিয়া রেসিজম ছড়ান বড়ই হতাশ লাগে। এরকম অজস্র জন আছেন। রবি ঠাকুরও অনুরোধে ঢেঁকি গিলে বিজ্ঞাপনে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন। কলকাতার ১৬৭/৩ কর্নওয়ালিশ রোডে নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে ওরা তৈরি করত পাগলের ওষুধ। সেই ওষুধের বিজ্ঞাপনেও রবীন্দ্রনাথের প্রত্যয়ন পত্রের সন্ধান মেলে। ডাক্তার উমেশচন্দ্র রায়ের জগদ্বিখ্যাত ‘পাগলের মহৌষধ’ শিরোনামের সেই বিজ্ঞাপনে বলা হচ্ছে—

“৭০ বৎসরের ঊর্ধ্বকাল যাবৎ লক্ষ লক্ষ দুর্দ্দান্ত পাগল ও সর্ব্বপ্রকার বায়ুগ্রস্ত রোগীর আরোগ্য করিয়াছে। মূর্চ্ছা, মৃগী, অনিদ্রা, হিষ্টিরিয়া, অক্ষুধা, স্নায়বিক দুর্ব্বলতা প্রভৃতি রোগেও ইহা আশুফলপ্রদ। প্রতি শিশি মূল্য ৫ টাকা।
বিবরণী-পুস্তিকা বিনামূল্যে পাঠাই ।

‘আমি ইহার উপকারিতা বহুকাল যাবৎ জ্ঞাত আছি’—রবীন্দ্রনাথ।" *
রেসিজমের কারণে তাইজুল, মাহমুদ উল্লাহ আসেন না লাইমলাইটে, কারণে তাদের চেহারা প্রচলিত সৌন্দর্যে খাপ খায় না। আহারে! বিজ্ঞাপন। তুমি ফুলশয্যার ঘর পর্যন্ত চলে গেছো। মেকআপ উঠে গেলে স্বামী হতাশ! মেয়ে আরো হতাশ!

আশার খবর যে প্যারোডি এ্যাড, এন্টি রেসিজম এ্যাড ও সচেতন - শিক্ষণীয় এ্যাড ও বানাচ্ছে অনেকে। বিজ্ঞাপন দিন বাট রেসিজম, প্রোপাগান্ডা, ফলস এ্যাডভারডাইসমেন্ট ছড়ায়েন না বস। ইউটিউবে এন্টি রেসিজম একটা এ্যাডে ত্বক ফরসা হওয়ার ক্রিমের কৌটার নাম দিছে রেসিজম, যা দিনকে দিন ব্যবহারের ফলে আরো আগলি হচ্ছে সে। হাততালি হবে।

ঋণ স্বীকার :
* বিজ্ঞাপনের রবীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞাপন- মাজুল হাসান

লেখা পাঠান- chilekothasahitto@gmail.com

মন্তব্যসমূহ

দেশসেরা বুকশপ থেকে কিনুন চিলেকোঠার বই

চিলেকোঠা বেস্ট সেলার বইসমূহ

‘নক্ষত্রের খোঁজে’ প্রতিযোগিতা ২০২২ এর নির্বাচিত বই