চিলেকোঠা ওয়েবজিনে প্রকাশিত সাহিত্যকর্ম ও অন্যান্য

(ড্যাশ)ইয়ান বিত্তান্ত


(ড্যাশ)ইয়ান বিত্তান্ত

তৌকির হোসেন


(ড্যাশ)ইয়ান কারা? 

এই সময়ের অন্যতম একটি পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, মানুষগুলো ধীরে ধীরে (ড্যাশ)ইয়ান হতে পছন্দ করছে৷ ধরেন, ঢাবিয়ান, বুয়েটিয়ান, রেমিয়ান, গ্রেগরিয়ান, ক্রসিয়ান, জোসেফাইট বা এমএসিয়ান। এদের সবাই কমবেশি স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী। নস্টালজিয়ার ধার ধরে বা প্রতিষ্ঠানে থাকাকালীন তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠানের সাথে –ইয়ান প্রত্যয় যুক্ত করে আলাদা স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি করে। এই পরিচয়ের বাইরে অন্য কারো শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিতে তারা নারাজ। তারা অন্যদের ইনফেরিয়র ভাবে। এটা এক ধরণের সামাজিক বিভাজন, যা এই দেশের জন্যে বিশেষ ফেনোমেনন।

"ইন্সটিটিউশনাল জাজমেন্ট" বলে আজকাল নতুন একখানা শব্দ শোনা যায়। আদতে নতুন না জিনিসটা, বেশ পুরোনো। কোন প্রতিষ্ঠানকে মাপকাঠি ধরে মানুষজনকে জাজ করা বা মন্তব্য করাকেই সাধারণত ইন্সটিটিউশনাল জাজমেন্ট বলে। কাউকে জাজ করা– নেতিবাচক অর্থেই নেওয়া হয়৷ তবুও মানুষ জাজ করে। যাকে জাজ করা হয় তার খারাপ লাগে। কিছু কিছু জায়গায়, (জাজমেন্ট খাওয়া) কারো কারো মন অবশ হয়ে পড়ে, ভেঙে যেতে থাকে, যখন কেউ কাউকে ইনস্টিটিউশন ধরে জাজ করে।

এটা নতুন বিষয় না। পঞ্চাশ বছর আগে অমুক জমিদারি বংশের মানুষ, তমুক উচ্চবর্গের বংশের মানুষ বলে মানুষকে গ্লোরিফাই করা হত। বিশ–ত্রিশ বছর আগে বাংলা সিনেমার মাধ্যমে 'চৌধুরী' বংশের ছেলে/মেয়ে, 'হাওলাদার' বংশের ছেলে/মেয়ে বলে চৌধুরী/হাওলাদার পরিবারকে হাই কালচারড ধরে ক্যাটাগোরাইজ করা হত৷ বংশ, পরিবার এগুলোও কিন্তু সামাজিক প্রতিষ্ঠান। সরাসরিভাবে দৃশ্যমান এই সামাজিক প্রতিষ্ঠান মানুষের পরিচয়ের একটা বেঞ্চমার্ক বা স্ট্যান্ডার্ড হিসাবে নেওয়া হত।

বর্তমানে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম সামাজিক প্রতিষ্ঠান যারা মাপকাঠি তৈরি করে দেয়। তুমি তমুক স্কুলের তাহলে নিশ্চয়ই ভালো ছাত্র, তুমি তমুক কলেজের তাহলে তো ফার্স্টক্লাস স্টুডেন্ট, তুমি কোন –ইয়ান, কুল, ট্যালেন্টেড ইত্যাদি... ইত্যাদি...। তুমি এমন একটা কলেজ থেকে আসছ যার নাম আমি বা কুল কলেজের পোলাপান শুনে নাই৷ তাইলে আমি তোমাকে চিনিই না। তুমি এক অর্থে 'নাই' আমার কাছে।

বহু পোলাপান এভাবে ডিপ্রেশনে পড়ে নতুন ইনস্টিটিউশনে পড়াশোনা করতে গিয়ে। কেননা তাকে সমানভাবে ট্রিট করছে না তার সহপাঠীরা। তারা নিজেদের ভেতর আলাদা (ড্যাশ)ইয়ান কোরাম তৈরি করে যার ফলে ছিটকে পড়ে অপরিচিত কোন একটা জেলার অপরিচিত কোন একটা স্কুলের সবসময় দ্বন্দ্বে ভুগতে থাকা একটা ছেলে বা মেয়ে। সে ভাবে তার কী পরিচয়, তার কী গুরুত্ব এই নতুন জ্ঞান শিখানোর প্রতিষ্ঠানে। 

সোশ্যাল আইডেন্টিটি (Social Identity) মানুষের চিন্তাভাবনার একটা প্রক্রিয়া আকারে হাজির হয়। তাজফেলের মতে, মানুষ নিজেদের, অন্যদের প্রথমে ক্যাটাগোরাইজ (Categorization) করে। আমি কি এইখানে পড়ি না ওইখানে পড়ি। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, আমার বন্ধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আমার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা, তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালি। এইভাবে ক্যাটাগোরাইজ করার পর মানুষ এই নামের মধ্যে, জায়গার মধ্যে নিজেকে স্থাপন ও সংশ্লিষ্ট করে। নিজের একটা আইডেন্টিটি (Identification) তৈরি করে। আমি 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়'–এ পড়ি, আমি 'ঢাবিয়ান'। আমি 'একেএস' ফার্মে চাকরি করি। আমি 'করপোরেট ম্যানেজার'। এটাই সোশ্যাল আইডেন্টিটি। এরপরে নিজেকে মানুষ অন্যদের সাথে তুলনা করা শুরু করে (Comparison)। সে তো ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের। আমি সার্টেইনলি ওখানের না৷ আমি তো তার মতো চাকরি করি না। তার আর আমার মধ্যে পার্থক্য আছে।
He is not my type.
He is not me
'They' are not 'US'.

তার মনে হয়, আই এ্যাম নো ফাক ইন হিয়ার।

এই জাজমেন্টের ভিত্তি কী? কোন একটা ইনস্টিটিউশন যেটা অন্যান্য মাপকাঠিতে সেরা বা ভালো অবস্থানে আছে। যেমন স্কুল কলেজের ক্ষেত্রে ভালো (ড্যাশ)ইয়ানদের স্কুলে জিপিএ ফাইভ পাওয়া স্টুডেন্ট নেয়, পাশের হার অধিক, শহরে অবস্থিত, কুল পোলাপান ভর্তি হয়। 

তাই তারা সবসময় ভালো।
তারা কোন ক্রাইম করতে পারে না।
তারা নকল করে না।
তাদের চিন্তাভাবনা অন্যদের থেকে আলাদা ও উন্নত। 

জাজমেন্টটা শুরু হয় যখন ওই ইনস্টিটিউশনের মানুষগুলো নিজেদের ওইরকমই ভাবতে শুরু করে। কিন্তু আসলে–
তারা সবসময় ভালো না।
তারাও ক্রাইম করতে পারে।
তারাও নকল করতে পারে।
তাদের চিন্তাভাবনা খুব বেশি আলাদা না এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে "শিট"।
কারণ, তারাও মানুষ।

কিন্তু এইসব এড়ায়ে (ড্যাশ)ইয়ানরা অন্য অপরিচিত স্কুল, কলেজ থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থীদের সমান চোখে দেখতে পারে না। আলাদা হয়ে স্বতন্ত্র কোরাম তৈরি করে নিজেদের কুল ভাবতেই থাকে।
তাদের চোখে অন্যরা ক্ষ্যাত।

অন্যদের ট্রিট করার এই প্রবণতাকে বলে সিচুয়েশনাল এ্যাট্রিবিউশনাল এরর (Situational Attributional Error)। যা মানুষের চিন্তাভাবনার একটা বিশেষ ত্রুটি। 

ধরেন, সামিহা পরীক্ষায় ফেল করলো। এটার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কেউ যদি বলে, ও তো ভালো কলেজে পড়ে না– তার মানে সে বলছে, ভালো কলেজে পড়ে না (সেহেতু এটা সিচুয়েশান) তাই তার ফেল করাটা যৌক্তিক। মানুষ অন্যদের আচরণ ব্যাখার জন্যে সিচুয়েশানকে বেঞ্চমার্ক হিসেবে ধরে নেয়।

আসলেই কী তাই? সে অসুস্থ থাকতে পারে, তার পড়তে ভালো লাগে না, অন্য পরীক্ষায় সে ভালো করতেই পারে, তার ব্যক্তিগত নানা কারণ থাকতে পারে পরীক্ষায় ফেল করার জন্যে।  কারো কার্যক্রমের পিছনে তার ইনস্টিটিউশনকে অন্যতম কারণ, কার্যকারণ ধরে নেওয়াটা চিন্তাভাবনার একটা ত্রুটি। কয়েনের দুই পাশ বিচার বিবেচনার অক্ষমতা।
তবুও (ড্যাশ)ইয়ান মানুষ নিজের ইনস্টিটিউশনকে বেস্ট ধরে অন্য ইনস্টিটিউশনকে ছোট করে দেখে। কেন? কেননা, বর্তমান সময়ে প্রতিটা ইনস্টিটিউশন মানুষজনকে আলাদা একটা পরিচয়/আইডেন্টিটি দান করে। এবং মানুষ এই আইডেন্টিটি আঁকড়ে ধরে ফাকড আপ পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে চায়। অস্তিত্বসংকট ঠেকানোর এই পন্থা বহু প্রাচীন এক ডিফেন্স মেকানিজম। ইনস্টিটিউশন আমাদের বাঁচার অর্থ দান করে।

খেয়াল করে দেখবেন, আজকাল চারপাশে যত (ড্যাশ)ইয়ান, ঢাবিয়ান, বুয়েটিয়ান, ইত্যাদি ইয়ান দেখা যায়, তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠান নিয়ে এক ধরণের গর্ববোধ করে। অন্তত এই প্রতিষ্ঠানগুলোয় পড়তে পেরে নিজেকে সার্থক মনে করে। কিংবা এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়তে পেরে নিজেদের আলাদা মনে করে। অন্যদের নিজেদের কাতারে ফেলতে প্রবল অনীহা কাজ করে ভেতরে ভেতরে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এমন কী দেয়?

মানুষ নিজেকে নিয়ে চিন্তিত, শঙ্কিত। নিজেদের সবার ভিতর হারিয়ে ফেলার থ্রেটে আশঙ্কিত। সবসময়ই মানুষ নিজেকে আলাদা করে দেখতে চায়। সমাজে মানুষ তাই নিজের স্বকীয় এক পরিচয় খুঁজে ফেরে। আইডেন্টিটি ক্রাইসিস থেকে মানুষ মুক্তি চায়। প্রতিযোগিতামুখর সমাজে মুক্তিদাতা হিসেবে হাজির হয় প্রতিষ্ঠানগুলো। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, করপোরেট অফিস, আদালত সবগুলোই নিজেদের অভ্যন্তরে ইঁদুরের মত ছুটতে থাকা মানুষদের পরিচয় দান করে।

সোশ্যাল আইডেন্টিটি (Social Identity) মানুষের চিন্তাভাবনার একটা প্রক্রিয়া আকারে হাজির হয়। তাজফেলের মতে, মানুষ নিজেদের, অন্যদের প্রথমে ক্যাটাগোরাইজ (Categorization) করে। আমি কি এইখানে পড়ি না ওইখানে পড়ি। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, আমার বন্ধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আমার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা, তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালি। এইভাবে ক্যাটাগোরাইজ করার পর মানুষ এই নামের মধ্যে, জায়গার মধ্যে নিজেকে স্থাপন ও সংশ্লিষ্ট করে। নিজের একটা আইডেন্টিটি (Identification) তৈরি করে। আমি 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়'–এ পড়ি, আমি 'ঢাবিয়ান'। আমি 'একেএস' ফার্মে চাকরি করি। আমি 'করপোরেট ম্যানেজার'। এটাই সোশ্যাল আইডেন্টিটি। এরপরে নিজেকে মানুষ অন্যদের সাথে তুলনা করা শুরু করে (Comparison)। সে তো ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের। আমি সার্টেইনলি ওখানের না৷ আমি তো তার মতো চাকরি করি না। তার আর আমার মধ্যে পার্থক্য আছে।
He is not my type.
He is not me
'They' are not 'US'.
এই 'আমরা' বনাম 'তোমরা' মনোভাব সোশ্যাল আইডেন্টিটির একটা প্রকাশ। অন্যকে আলাদা করে দেখা। নিজেকে আলাদাভাবে দেখা। নিজেকে অন্যের তুলনায় ভালো দেখা। 

কিভাবে আমি আমাকে আলাদা করে দেখব?
আমার প্রতিষ্ঠান দিয়ে। কারণ, প্রতিষ্ঠান আমাকে 'আমি' হইতে সাহায্য করসে। আইডেন্টিটি দান করেছে। এক অর্থে, প্রতিষ্ঠানের আইডেন্টিটি আমার থেকেও বড়।মানুষ পরিচয় আমার জন্যে যথেষ্ট না। ইনস্টিটিউশন দিয়ে মানুষকে জাজ করাটা তবুও মানুষের দোষ না। কেননা, মানুষ অন্যের ব্যাপারে মন্তব্য করবেই, জাজ করারটা তার স্বভাব৷ বরং জাজ করার এই ধরণকে বলা যায়, এক ধরণের দৃষ্টিভঙ্গি। সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি। সচেতনভাবে কেউ এই দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে না বরং উৎপাদন করা হয়। এই সমাজে এইরকম দৃষ্টিভঙ্গির আধিক্য ঘটেছে। কারণ, সমাজই কোন না কোনভাবে এই দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে সাহায্য করছে। এখন মানুষকে আলাদা করে চিনতে পারার মাধ্যম– কিছু সংখ্যা, কয়েকটা লাইন, ইনস্টিটিউশনের ট্যাগ৷ ইনস্টিটিউশনের ট্যাগ ছাড়া কোন মানুষকে আলাদা করে চিনবার উপায় নাই। ধরেই নেওয়া হয়, ভালো ইনস্টিটিউশন যোগ্য মানুষ তৈরির আবশ্যিক শর্ত। (এটা বলা হচ্ছে না, ভালো ইনস্টিটিউশন যোগ্য মানুষ তৈরিতে সাহায্য করে না বরং বিষয়টাকে শর্ত আকারে হাজির করলেই সমস্যা তৈরি হয়। আবার, 'ভালো' কোন মাপকাঠি ধরে বলব তাও চিন্তার অবকাশ রাখে।) ব্যাপারটা অনেকাংশে এমন, মানুষের গুরুত্ব কমে যাচ্ছে। 

মিশেল ফুকো তাঁর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, হিউম্যান ইজ ডেড। এর অর্থ তিনি বুঝিয়েছেন, মানুষ ধারণার মৃত্যু ঘটেছে। পোস্টমর্ডান তাত্ত্বিকদের অনেকেই এই হাইপাররিয়েল জমানায় 'মানুষ' কতটুকু গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে তার বয়ানে নিজেদের অনেক সময় ব্যয় করেছেন। আদতে, 'মানুষ'–এর মৃত্যু না ঘটলেও, 'মানুষ'–এর গুরুত্বের অনেকখানি মৃত্যু ঘটেছে। 

এই গুরুত্বহীন পরিস্থিতি অস্তিত্ব সংকট তৈরি করে। পরিচয় সংকট তৈরি করে। তখন মানুষ নিজেকে কিভাবে অন্যদের থেকে আলাদা করা যায় তার উপায় খুঁজে। এই নয়া–উদারনৈতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায়, প্রতিষ্ঠানই মানুষকে আলাদা করে দিতে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করে। এবং মানুষ নিজের পরিচয়ের বাইরে অন্য কাউকে গ্রহণ করতে পারে না।

ইনস্টিটিউশনাল জাজমেন্ট (ড্যাশ)ইয়ান মানুষের সংকীর্ণতা আসলে তুলে ধরে না বরং তুলে আনে দৃষ্টিভঙ্গির সংকীর্ণতা। এর জন্যে দায়ী মানুষ না, দায়ী হচ্ছে পরিস্থিতি। বর্তমান সময়ে পরিস্থিতির চাপে মানুষের ধারণা প্রতিনিয়তই কাঁপছে। আর মানুষের অস্তিত্ব তো সবসময়ই সংকটে নিপতিত। আমাদের বেঁচে থাকতে খড়কুটো দরকার হয়, যাতে তলিয়ে না যাই৷ প্রতিষ্ঠানগুলো দড়ি ছুঁড়ে দেয় আমাদের দিকে, তলিয়ে যেন না যাই। আমরা ওই দড়ি ধরে ফেলি। কিন্তু মাঝেমধ্যেই ভুলে যাই, ওই প্রতিষ্ঠানগুলোও ভাসমান৷ আমাদের মতই৷ যেকোন সময় আমাদেরকে নিয়েও তলিয়ে যেতে পারে 'গুরুত্বহীনতা'–র অতল গহ্বরে।

chilekothasahitto@gmail.com

মন্তব্যসমূহ

দেশসেরা বুকশপ থেকে কিনুন চিলেকোঠার বই

চিলেকোঠা বেস্ট সেলার বইসমূহ

‘নক্ষত্রের খোঁজে’ প্রতিযোগিতা ২০২২ এর নির্বাচিত বই