চিলেকোঠা ওয়েবজিনে প্রকাশিত সাহিত্যকর্ম ও অন্যান্য

আমি পাঠক বলছি (৭)



আমি পাঠক বলছি (৭)
।আখতার মাহমুদ

(“আমি পাঠক বলছি” শিরোনামে ধারাবাহিকভাবে আমার পড়া বই নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করি।  আমি সর্বভুক পাঠক। সব পড়ি। লেখা সুখপাঠ্য হলে লেখক আস্তিক না নাস্তিক, মোল্লা না ব্রাহ্মন, দেশি না বিদেশি, নতুন না পুরাতন, লেখায় গভীরতা আছে কী নেই এসব বাছবিচার এ যাই না। লেখাটা পড়ে ফেলি। কখনো কখনো মতামতও দেয়ার চেষ্টা করি। পাঠক হিসেবে আমার এই কখনো কখনো দেয়া বক্তব্য হয়ত লেখকের/লেখকগোষ্ঠীর মনঃপূত না-ও হতে পারে কেননা লেখার বিচারিক ক্ষমতা কখনোই একজন পাঠক আর লেখকের মধ্যে সমানভাবে থাকে না। দৃষ্টিভঙ্গীও সমান হয় না। তবু পাঠক হিসেবে ভাবনা তুলে ধরার সুযোগ থাকায় কলম হাতে নেয়ার দুঃসাহস করেছি। আশা করছি, লেখকগণ ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আমার এই দুঃসাহস আর আমার সমালোচনাকে আক্রমণ হিসেবে নেবেন না। সমালোচনা নেয়ার মানসিকতা যে লেখকের নেই, তিনি এখানেই থেমে যেতে পারেন। সেটাই মঙ্গলজনক)

পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ সাঈদ কামালের উপন্যাস ‘দোজখের লাল রঙ’


বইমেলা ২০২০ এ কেনা বইগুলো কিনেই ধরা হয় না পরীক্ষা নামক বিভীষিকায়। দামড়া বয়সে আইন বিষয়ে পড়ার শখ হলে হুট করে একদিন ভর্তি হয়ে আবিষ্কার করি এটি বেশ ইন্টারেস্টিং সাবজেক্ট। যত কাঠখোট্টা আগে মনে হয়েছিল তত নিরস নয় আইন বিষয়টি। অবশ্যই এটি আমার শিক্ষকদের গুণও বলা চলে। তারা যোগ্য বলেই বোধহয় আইন পাঠ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। তো ফেব্রুয়ারীতেই এলএলবি পরীক্ষা শুরু হওয়ায় বইমেলায় কেনা বইগুলোতে পড়ে ধুলোর আস্তর। মার্চ নাগাদ পরীক্ষা শেষ হলে, এপ্রিলে বইগুলো ধরা যাবে এমন লক্ষ্য নিয়ে গোঁ ধরে পরীক্ষার পড়া গুছিয়ে চলি। কিন্তু করোনা ব্রেকে পরীক্ষার রুটিন এলোমেলো হয়ে পড়ায় নজর ফেরাই বইগুলোতে। ধুলো পরিষ্কার করি এবং চট করে ‘দোজখের লাল রঙ’ তুলে নিই হাতে। 

যে কোনো বই হাতে নেবার সময়ে কিছুটা আতংকিত হই। লেখক আমাকে মুগ্ধ করবে এটা আশা করে কখনোই বই পড়ি না। কিন্তু লেখক আমার পাঠকী জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন কিনা সে আশঙ্কাতেই ভুগি মূলত। এই আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা নিয়মিত পাঠক মাত্রই জানেন।  ‘দোজখের লাল রঙ’ পড়তে শুরু করে বরাবরের মতোই মুগ্ধতায় পৌঁছানোর আগে কিছু ফিল্টারের মুখোমুখি করি উপন্যাসটাকে। এই ফিল্টারগুলো যেসব প্রশ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে সেসব হলো- মৌলিকত্ব, লেখার ঢঙ (যেসব লেখার ঢঙ হুমায়ুনীয় সে লেখা প্রথমেই বাতিলের খাতায় ফেলে দিই), লেখার  বিষয়বস্তু (লুতুপুতু প্রেম, সত্তর-আশি দশকের সিনেমাটিক দুঃখ-কষ্ট ও জীবন সংগ্রাম দেখানো সামাজিক উপন্যাস বা গল্প বা প্রবন্ধ বিষয়ক বই দু’পাতা পড়েই ঠেলে দিই বইয়ের তাকের দুর্গম স্থানে), সাহিত্যমান, লেখার বোধ, লেখকের দর্শন ও সর্বোপরি লেখক কী বলতে চান ইত্যাদি।

‘দোজখের লাল রঙ’ পড়ে যদিও শেষতক মুগ্ধতায় পৌঁছানো হয় না, তবে লেখাটায় বোধ আছে বলে কিছু ভাবনায় ডুবি। লেখকের লেখার দায় লেখকেরই। পাঠকের সুযোগ থাকে কেবল নির্মোহ দৃষ্টিতে পাঠ করে চলার। প্রতিজন লেখকই নিজ দৃষ্টিভঙ্গি এবং ব্যক্তিগত পর্বেক্ষণের ঘেরাটোপ থেকে বেরুতে পারেন না বোধহয়। সাঈদ কামালও পারেন নি। যে আলোতে তিনি লাহাব লাল এবং তার পিতাকে ব্যাখ্যা করেন, সে আলোতে আমি দেখি না বলে সব ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয় আমার কাছে। ক্ষমতার দর্শন চিরকাল ব্যক্তি দর্শন হতে আলাদা। ব্যক্তিগত আবেগ-বিশ্বাস দিয়ে এর থৈ পাওয়া যাবে না। ক্ষমতা দৃঢ় করতে সবসময়েই একজন আইকন বা কোনো আদর্শকে বারবার সামনে রাখতে হয়। এর বিকল্প নেই। ক্ষমতা মুঠোয় থাকলে মানুষ তার প্রতিটি কাজের বা আচরণের বৈধতা ঘোষণা করে আদর্শের আলোকেই। ক্ষমতার দর্শন মানুষকে চালিত করে নিজ আচরণের সঠিকত্ব ও বড়ত্ব দেখাতে।

পাঠক মজনুকে ভুলে গেলেও শ্যামলতাকে মনে রাখবে। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, মজনুর যে ত্যাগ তা নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে ভালবেসে নয়। তার সমস্ত প্রতিবাদ, তার প্রতিক্রিয়া সবই আসে তার বিশ্বাসমতে সত্যকে ভালবেসে। কিন্তু শ্যামলতার কেবল মজনুই সব। শ্যামলতার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যও যেমন মজনু, তেমনি তার সত্যও মজনু। তার কাছে মজনুই সত্য। মজনু নেই তো সত্য নেই, স্বপ্ন নেই, জীবন নেই। ফলে, পাঠককে মজনু যতটা টানবে তার চেয়ে বেশি টানবে শ্যামলতা। এর মনস্তাত্ত্বিক কারণটা হলো, দিনশেষে মানুষ ব্যক্তিগত উচ্ছ্বাসকেই ধ্রুব মেনে নেয়। আমরা সাধারণ মানুষেরা আদর্শ হোক আর সত্য, দিনশেষে সবকিছুকেই পেছনে ফেলি আর সামনে রাখি কেবল ব্যক্তিগত কামনা আর সুখ।

উপন্যাসে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়ানো লাহাব লাল পূর্বে কখনো সংগ্রাম বা ত্যাগের ফলে বর্তমানে এসেছে পৌঁছেছে কিনা বা লাহাব লালের পিতা আদর্শ হয়ে উঠেছেন কেমন করে বা তার ত্যাগ বা অবদান কী ছিল দেশের জন্যে, সে বিষয়ে উপন্যাসের প্রধান চরিত্র মজনুর কোনো বয়ান আমরা দেখি না। কখনো কোনো নির্যাতন, দমন বা বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে লাহাব লাল বর্তমানে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে এসে পৌঁছেছেন কিনা সে বিষয়েও লেখক নীরব।  লেখক মনোযোগ দিয়েছেন লিমরানদের ধর্মবিরোধী অবস্থানের প্রেক্ষিতে তজফা দলের প্রতিবাদ এবং সেই প্রতিবাদ দমনে লাহাব লালের নিষ্ঠুরতা দেখাতে। কিন্তু একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লেখক আবেগতাড়িত হয়ে মিস করেছেন, সেটা হলো তজফা দলের জনসমর্থন বা জনসমুদ্রকে বিপথে চালিত করতে বা নিজ স্বার্থ উদ্ধারে আরো দুটো দল তৎপর ছিল। মূলত তাদের প্ররোচনাই লাহাব লালকে কঠোর হতে বাধ্য করেছে। 

এটা স্পষ্ট যে, তজফাদের গোলাপ চত্বরে অবস্থান লাহাব লাল বিরোধী ছিল না। এবং লাহাব লালও তা জানতেন। বরং অন্য দুটি দলের উসকানি এবং কর্মকান্ডই এই অবস্থানকে লাহাব লাল বিরোধী করেছে। শাসকের তরফ থেকে যদি কোন ধর্মীয় অবস্থানকে রাজনৈতিক অবস্থান বলে সন্দেহ হয় তবে শাসক সাধারণত কঠোর পদক্ষেপই নিয়ে থাকে। আর কোনটা ধর্মীয় অবস্থান আর কোনটা উগ্রবাদ এটা যাচাই করার পরিস্থিতি বা সময় সবসময় থাকে না। আমরা দেখেছি, এদেশে উগ্রবাদী কর্মকান্ডগুলো সব ধর্মের ব্যানারেই করেছে সন্ত্রাসীরা। আমরা দেখেছি রমনার বটমূলে হামলা হয়েছে, আমরা দেখেছি সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলা হয়েছে, আমরা বাংলা ভাইয়ের উত্থান দেখেছি, আমরা দেখেছি গুলশানে অজ্ঞ যুবকেরা ধর্মের নাম করে নিরীহ মানুষ মেরে উল্লাস করেছে ।  এসবতো অস্বীকারের উপায় নেই।

উপন্যাসে আমরা দেখি উপরোক্ত বিষয়গুলো মজনুর বিবেচনায় থাকে না। তার অভিযোগ, বর্তমান অন্যায় দেখে এবং সে দৃঢ়  প্রতিবাদ করে অন্যায়ের। এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যখন মানুষ বর্তমানের কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করে না, তখন অতীত বা ভবিষ্যতের কোনো অন্যায়ের প্রতিকার পাওয়ারও অধিকার হারায়। তো প্রতিবাদের  ফলশ্রুতিতে মজনু জিব হারায়। যদিও তাকে শাস্তি বেছে নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। হয় চোখ না হয় জিব। মজনু জিব হারানো বেছে নেয়। 

একটি প্রতিকাশ্রয়ী উপন্যাস কখনোই সব খুলে বলে না। এতে লেখকের উপলব্ধি ও দর্শনের ছায়া থাকে কেবল। কিন্তু ‘দোজখের লাল রঙ’-কে প্রতীকাশ্রয়ী উপন্যাস বলা হলেও পড়ে মনে হয়েছে, মজনুর মধ্য দিয়ে লেখক ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন সরাসরিই, কোনো প্রতীকের সাহায্য ছাড়াই।।  এধরণের কাজকে আমি লেখকদের সীমাবদ্ধতা হিসেবেই দেখি। আমি মনে করি, লেখকের উচিত তার রচনাকে ব্যক্তিগত আবেগ থেকে মুক্ত রাখা। নিজ আবেগ রুদ্ধ করলে লেখকের আরো অনেক চোখ খুলে যায়।  যা লেখককে পরিণত করে, ঋদ্ধ করে। তবে কী আমি বলতে চাইছি, লেখক ব্যক্তিগত মত লেখায় আনবেন না? না, সেটা বলতে চাইছি না। লেখক অবশ্যই নিজ অভিমত লেখায় বলবেন, তবে তা চমকপ্রদ হয় যদি লেখক সরাসরি না বলেও তা বলেন। এরূপ কাজের উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা যায়, অরওয়েলের ‘এনিম্যাল ফার্ম’ কিংবা সুইফটের ‘গালিভারস ট্রাভেলস’-কে। বাংলায় নিজের অভিমত সরাসরি না বলেও হরদম যিনি বলে গেছেন- তিনি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মতো চৌকস কথাসাহিত্যিক বাংলায় খুঁজে পাওয়া মুশকিল। অভিব্যক্তিতে তিনি দেশ-কালের সীমানা ছাড়িয়েছিলেন। 

যে কোনো লেখার নেতিবাচক দিকে নিয়ে আলাপ করা আমার স্বভাব। যদিও এতে করে আমার উদ্দেশ্য লেখকদের ছোট করা নয়; বরং পাঠক কল্যাণ সমিতির স্বঘোষিত সভাপতি হিসেবে আমার উদ্দেশ্য, তাদের উন্নত করে তোলা। সাধারণত কোনো লেখার ইতিবাচকতা চোখে না পড়লে সে বই নিয়ে কোনো আলাপই করি না। ছুঁড়ে ফেলে রাখি বইয়ের তাকের দুর্গমতম স্থানে। আর ভুলে যাই বইটিকে। সাঈদ কামালকে এই প্রথম পড়েছি আমি। ফেসবুকে কার একটা পোস্ট দেখে যেন তার বইটা বিষয়ে আগ্রহ বোধ করি। এছাড়াও বিদ্যানন্দের পাণ্ডুলিপি পুরস্কার প্রাপ্ত বলে আগ্রহ আরো বাড়ে। কেননা যতদূর জানি, বিদ্যানন্দের লিটারেরি সেন্স ভাল। বইটা পড়লে এর প্রমাণও পাওয়া যায় হাতে হাতে। সাঈদ কামালের লেখার হাত দারুণ। তিনি অনেকদূর যাবেন। তার প্লট  আর ডায়ালগ নির্মাণে দারুণ সক্ষমতা রয়েছে। যদিও সমস্ত উপন্যাস জুড়েই আছে এক রকম বিষণ্নতা, হতাশার ছায়া। যার প্রায় সবটাই মজনুর। 

তবে বিষণ্নতার আধিক্য থাকা সত্ত্বেও উপন্যাসকে বর্ণিল করে তোলে শ্যামলতার উপস্থিতি। শুধু মজনুর জীবনকেই বর্ণিল করে না শ্যামলতা। পাঠককেও আদ্র করে। পাঠক মজনুকে ভুলে গেলেও শ্যামলতাকে মনে রাখবে। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, মজনুর যে ত্যাগ তা নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে ভালবেসে নয়। তার সমস্ত প্রতিবাদ, তার প্রতিক্রিয়া সবই আসে তার বিশ্বাসমতে সত্যকে ভালবেসে। কিন্তু শ্যামলতার কেবল মজনুই সব। শ্যামলতার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যও যেমন মজনু, তেমনি তার সত্যও মজনু। তার কাছে মজনুই সত্য। মজনু নেই তো সত্য নেই, স্বপ্ন নেই, জীবন নেই। ফলে, পাঠককে মজনু যতটা টানবে তার চেয়ে বেশি টানবে শ্যামলতা। এর মনস্তাত্ত্বিক কারণটা হলো, দিনশেষে মানুষ ব্যক্তিগত উচ্ছ্বাসকেই ধ্রুব মেনে নেয়। আমরা সাধারণ মানুষেরা আদর্শ হোক আর সত্য, দিনশেষে সবকিছুকেই পেছনে ফেলি আর সামনে রাখি কেবল ব্যক্তিগত কামনা আর সুখ।

‘দোজখের লাল রঙ’ উপন্যাসটা সময়ের স্বাক্ষর কিনা সেটা সময়ই বলবে। তবে যে গুরুত্বপূর্ণ কারণে উপন্যাসটা পাঠ্য মনে হয়েছে সেটা হলো, ‘মুসলিম হীনমন্যতা’ থেকে বেরিয়েছেন লেখক। ‘মুসলিম হীনমন্যতা’ বলতে, সাধারণত মুসলিম লেখকেরা, বিশেষ করে যারা গল্প-উপন্যাস-কবিতা লিখে চলেছেন তারা মুসলিম পরিচয়টা নিজ লেখা থেকে পৃথক রাখেন।  সাধারণত পাঠক হারানোর ভয় বা ইসলাম বিষয়ে অজ্ঞতাই এর পেছনে মূল অনুঘটক। অথচ বড় বড় লেখকেরা সবাই-ই কখনোই তাদের পরিচয় লুকান নি। আস্তিকেরা আস্তিক্যের স্বাক্ষর লেখায় রেখেছেন, নাস্তিকেরা নাস্তিক্যের। তারা বর্ণচোরা ছিলেন না। নিজ বিশ্বাস-অবিশ্বাস নিয়ে হীনমন্য ছিলেন না। 

সাঈদ কামাল এই হীনমন্যতা থেকে বেরিয়েছেন দেখে ভাল লেগেছে। মুসলিমদের দর্শন ও চাওয়া তিনি স্পষ্ট করেছেন উপন্যাসে। এবং এটা করতে গিয়ে তার লেখার সাহিত্যমান টলে যায়নি কোথাও। বইয়ে লেখকের আদর্শ বা ধর্মীয় আবেগ থাকলেও শেষ পর্যন্ত এটা সার্থক উপন্যাসই হয়ে উঠেছে লেখার গুণে।  এর আগে শাহেদ আলী ছাড়া আর কারো ভেতরে এ গুণটা দেখিনি। মুসলিম মানসের সাথে সাহিত্যগুণ মেশানোর মতো লেখক অবশ্যই দুর্লভ।  যদিও উগ্রবাদী  সেক্যুলারদের গায়ে এ উপন্যাস জ্বালা ধরাবে, তবে বোধসম্পন্ন সেক্যুলাররা ভাবনার কিছু খোরাক এই বইয়ে পাবেন বলেই আমার ধারণা। আর যেসব পাঠক বা লেখক ‘মুসলিম হীনমন্যতা’ নিয়েই থাকতে ভালবাসেন এবং একে জীবনদর্শন হিসেবে নিয়েছেন তারাও উগ্রবাদী সেক্যুলারদের মতো এই উপন্যাসের আলো সহ্য করতে পারবেন না। তাদের এর থেকে দূরে থাকাই উত্তম হবে।

উপন্যাসের একটা ত্রুটির কথা বলে শেষ করি... কয়েকটা চ্যাপ্টারে ভাগ করা হয়েছে উপন্যাসটা এবং প্রতিটা চ্যাপ্টারের চমৎকার সব নাম দেয়া হয়েছে, যেমন- স্বপ্নের রং লাল, সত্য সন্দেহময়, স্বপ্নের লাল মসজিদ..... ইত্যাদি। কিন্তু এটা অপ্রয়োজনীয় ছিল। এর কারণে উপন্যাসে কিছু কম-বেশি হয়নি। তাই, যা অপ্রয়োজনীয় তাকে লেখার অংশ না করলেও কিছু যায় আসে না।

বিঃদ্রঃ করোনার সিজন চলছে, যেখানে সেখানে বই দেখেই ধরতে যাবেন না। আপাতত কিছুদিন বাইরে বই নেড়ে-চেড়ে দেখা থেকে বিরত থাকুন। নিজেকে ও অন্যকে নিরাপদে রাখুন। হ্যাপী রিডিং!



ঘোষণাঃ
‘আমি পাঠক বলছি’ শিরোনামে বইপাঠ পরবর্তী কিছু উপলব্ধি- লেখক ‘পথিক রাজপুত্র’ ছ্দ্মনামে চিলেকোঠা সাহিত্যের জন্যে লিখেছিলেন।  এখন থেকে তিনি স্বনামে এটি লিখবেন। উল্লেখ্য, এর পূর্বে  তিনি ‘পথিক রাজপুত্র’ ছ্দ্মনামে ছয়টি পর্ব লিখেছেন চিলেকোঠার জন্যে।
– চিলেকোঠা এডমিন।

লেখা পাঠান- chilekothasahitto@gmail.com

মন্তব্যসমূহ

দেশসেরা বুকশপ থেকে কিনুন চিলেকোঠার বই

চিলেকোঠা বেস্ট সেলার বইসমূহ

‘নক্ষত্রের খোঁজে’ প্রতিযোগিতা ২০২২ এর নির্বাচিত বই