উম্বের্তো সাবা’র তিনটি কবিতা
অনুবাদঃ আবির আবরাজ
উম্বের্তো সাবা একজন ইতালিয়ান পোয়েট এবং নভেলিস্ট। তিনি ত্রিয়েস্তের কস্মোপলিটন মেডিটেরিয়ান পোর্টের উম্বের্তো পোলিতে জন্মগ্রহণ করেন ৯ মার্চ, ১৮৮৩ সালে এবং মৃত্যুবরণ করেন ২৫ এ আগস্ট, ১৯৫৭ সালে। এইখানে তার তিনটি কবিতার অনুবাদ দেয়া হলো:
ত্রিয়েস্তে
পুরোটা শহর প্রদক্ষিণ করে এসে
আমি তার শেষ প্রান্তের একটা পাহাড়ের চূড়ায় উঠে দাঁড়াই।
প্রথমে যদিও তুমুল জনাকীর্ণ ছিলো, এখন চূড়ান্ত শূণ্যতায় লীন।
চতুর্দিক থেকে খাটো একটা দেয়ালে আবদ্ধ,
তারই এক কোণ, সেখানে আমি বসে আছি একা
আর ধীরে ধীরে টের পাই এটাই সে জায়গা যেখানে এসে শহরের সীমানা শেষ হয়ে যায়।
ত্রিয়েস্তে,
যে শহরটির রয়েছে অন্ধকারের আশীর্বাদ,
এটাকে তিক্ত বেদনাবিধুর আর প্রতিকূলচারীও বলা যায়,
যেনো প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত এবং যার নীল চোখ,
আর হাত এতোটাই কদাকার
যে সে হাত কখনো ফুল ছুঁতে পারে না।
ভালোবাসার মতোই
সে ইর্ষায় আক্রান্ত
এই পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে আমি শহরের প্রতিটি চার্চ আর রাস্তা আবিষ্কার করতে পারি
যাদেরকে দেখলে মনে হয় প্রত্যেকেই একে একে আশ্চর্য অস্থিরতায় টালমাটাল সমুদ্রে গিয়ে মিশে গেছে।
অথবা,
একেবারে শেষ প্রান্তে থাকা সেই পাথুরে দোকানটি ,
কেউ একজন বাস করে যার উপরিভাগে,
একই আবর্ত,
সে'ও জড়িয়ে আছে।
এখানকার প্রতিটি ঘটনাকে একটা অদ্ভুত হাওয়া, একটা ব্যাকুল অথচ পরিচিত হাওয়া , যেভাবে
পরম যত্নে ঘিরে থাকে।
আমার শহর,
আমার সকল পরিচিত অস্তিত্ব জুড়ে যে বেঁচে আছে
আমার জন্যে, আমার বাকী জীবনের জন্যে ক্ষুদ্র এই কোণটিকে ছেড়ে দিয়েছে,
নিস্তব্ধ, মেলানকোলিক।
নীৎসে
একটা নিঃসঙ্গ মহিমার চারপাশে
কোনো পাখি উড়ে না,
কোনো কৌতূহলী আনাগোনাও দেখা যায় না।
তারচে ওই পাখির বাসাগুলির কাছাকাছি'ই থাকা ভালো,
তা নাহলে
নিস্তব্ধতা ছাড়া কিছুই শুনবেনা
কিছুই দেখবেনা বাতাস ব্যতীত।
পাতা
আমি তো ওই পাতাটির মতোই, দেখো;
একেবারে শূন্য শেখররে সেই পাতাটি
যার মধ্যে এখনো কিছুটা সৌন্দর্য বেঁচে আছে ।
আমার বার্ধক্য দেখে দুঃখ কোরো না
তখন নাহয় উপেক্ষা কোরো আমাকে।
যার জন্যে উৎকণ্ঠা আর বিরক্তিতে তুমি ক্লান্ত।
শিশুতোষ বিষাদ নিয়ে এখানে না আসলেও হবে।
তারচে বরং আমাকে বিদায় দাও-
যদিও এটা আলাদা করে বলার দরকার নেই।
মৃত্যু এমন কিছুই নয় ; তোমাকে হারানো যতোটা কঠিন।
লেখা পাঠান- chilekothasahitto@gmail.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন