চিলেকোঠা ওয়েবজিনে প্রকাশিত সাহিত্যকর্ম ও অন্যান্য

সম্পাদনার বিড়ম্বনা



পাণ্ডুলিপি নির্বাচনের পর চিলেকোঠার জন্য যে বিষয়টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় সেটা হলো সম্পাদনা। সম্পাদনার ক্ষেত্রে আমরা নিষ্ঠুর থাকি। প্রচুর কাটাছেড়া করি যে কোনো পাণ্ডুলিপিতেই এবং আমরা সম্পাদনা করি তিন ধাপে। একারণে আমাদের একটা পাণ্ডুলিপি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে যথেষ্ট সময় লাগে।

প্রথম ধাপে,

পাণ্ডুলিপি পাওয়ার পর লেখককে মৌখিক বা লিখিত পরামর্শ দিই কোন বিষয়গুলো বদলাতে হবে বা কোথায় আপডেট করলে ভালো হয়। প্লটহোল থাকলে সেটা দূর করার পরামর্শ দিই। এরপর প্রয়োজনীয় আপডেট বা সংশোধনের পর লেখক পাণ্ডুলিপি পাঠালে সেটা আমরা পরবর্তী ধাপের জন্য কাজ শুরু করি।

দ্বিতীয় ধাপে,

আমরা পাণ্ডুলিপি পাঠাই প্রফেশনাল সম্পাদকের কাছে। তবে সম্পাদনার পাশাপাশি প্রুফ রিডিংটাও করাই।

এখানে বলে রাখা ভালো, অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা আছে, প্রুফ রিডিং মানেই সম্পাদনা। ব্যাপারটা তা না আসলে। প্রুফ রিডিং-এ মনোযোগ দেওয়া হয় বানান, যদি চিহ্ন ইত্যাদিতে। কিন্তু সম্পাদনার বিষয়টা বিস্তৃত। প্রুফ রিডিং অনেকেই করতে পারে কিন্তু সম্পাদনার জন্য আলাদা নজর লাগে, সাহিত্য জগত সম্পর্কে ধারণা থাকার দরকার পড়ে। 

আরো একটা বিষয় উল্লেখ করা জরুরি, বানান নিয়ে নানান সময় নানান পাঠক আপত্তি জানান। যদিও আমরা বেশিরভাগ সময়ই বাংলা একাডেমির বানানরীতি অনুসরণ করি।  কিন্তু বানান বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্তে অনড় থাকা ঠিক নয়। কারণ ভাষা বহমান, নতুন নতুন শব্দ যোগ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। 

এছাড়া, অনেক তরুণরাই আছে বানান ভেঙে নিজের তৈরি নতুন বানানে লিখছেন। জেনে বুঝেই করছেন। আমাদের বেশ কয়েকটা পাণ্ডুলিপিতেই লেখকেরা অপ্রচলিত বানান ও নতুন শব্দ ব্যবহার করেছেন। কেউ কেউ অপ্রমিতে লিখছেন। পাঠকদের হয়তো মনে হতে পারে সেসব ভুল।

কিন্তু ভুল না, বরং অপ্রচলিত বানানটাই লেখক তার পাণ্ডুলিপিতে ব্যবহার করতে পছন্দ করছেন। আলাদা ঢঙে সংলাপ গুলো সাজানো পছন্দ করছেন। এ ক্ষেত্রে লেখকদের আমরা স্পেস দিই, জোর খাটাই না। তবে কিছু ক্ষেত্রে আমরা যদি দেখি বাক্যের মাধুর্য নষ্ট হচ্ছে তখনই কেবল শব্দ বদলে দিই। সংলাপের ধরন বদলে দিই।

প্রফেশনাল সম্পাদকের টেবিল থেকে পাণ্ডুলিপি ঘুরে আসার পর সম্পাদকের পর্যবেক্ষণসহ আবারো পাণ্ডুলিপিটা লেখকের কাছে পাঠাই। সম্পাদকের পর্যবেক্ষণগুলো যৌক্তিক মনে হলে লেখক সেসব গ্রহণ করেন ও সেভাবে আপডেট করেন। তারপর আমাদের কাছে পাঠান। 

চূড়ান্ত ধাপে,

আমরা আরো একবার সম্পাদনা করি পাণ্ডুলিপি, সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত। আমরা পাণ্ডুলিপি নিয়ে সন্তুষ্ট হলে তারপর আরো একবার দেখাই লেখককে। লেখক গ্রীন সিগন্যাল দিলে তারপর প্রেসে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করা হয় পাণ্ডুলিপি।  সেটা আরেক চ্যালেঞ্জ। সেটা নিয়ে আরেকদিন হবে গল্প!


সম্পাদনা টীম


ছবি: প্রতিকী 

মন্তব্যসমূহ

দেশসেরা বুকশপ থেকে কিনুন চিলেকোঠার বই

চিলেকোঠার জনপ্রিয় বই


চিলেকোঠা সাহিত্য সম্মাননা ‘নক্ষত্রের খোঁজে ২০২৩’ এর নির্বাচিত বই



চিলেকোঠা সাহিত্য সম্মাননা ‘নক্ষত্রের খোঁজে ২০২২’ এর নির্বাচিত বই